আওয়ামী লীগ কোনোদিন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া সরকার গঠন করে নাই: প্রধানমন্ত্রী
গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া আওয়ামী লীগ কোনোদিন সরকার গঠন করেনি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, 'রাতের অন্ধকারে অস্ত্র তুলে ক্ষমতা দখলকারীরা আবার যেন কেউ জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।'
আজ মঙ্গলবার সকালে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় ২৪টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের ১৫৭টি প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ৪১টি অবকাঠামোর উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী।
এদিন প্রধানমন্ত্রী ১১টি জেলা—টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, সিলেট ও মৌলভীবাজার ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'পঁচাত্তর সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর রাতের অন্ধকারে অস্ত্র হাতে নিয়ে মিলিটারি ডিকটেটর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে এই দেশে জাতির পিতার হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে এবং বিচারের হাত থেকে তাদেরকে বিচারের হাত থেকে মুক্ত রাখে। যুদ্ধাপরাধী, নারী ধর্ষণকারী, লুটপাটকারী, গণহত্যাকারী, অগ্নি সন্ত্রাসকারী, সেসব যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার শুরু হয়েছিল, তাদেরকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। আরা যারা স্বাধীন বাংলাদেশ চায়নি, পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল তাদের ফিরিয়ে এনে ক্ষমতায় বসায়।
'আজকে বাংলাদেশে যে ভোট নিয়ে খেলা, তার সেই হ্যাঁ-না ভোটের ইতিহাস; যেখানে আর না বাক্স কেউ পায়নি। একাধারে সেনাপ্রধান, একাধারে রাষ্ট্রপতি, সেনা আইন লঙ্ঘন করে সংবিধান লঙ্ঘন করে আবার নির্বাচন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ১০০ ভাগরে উপরে ভোট নিয়ে অবৈধ ক্ষমতা বৈধ করার চেষ্টা করে এবং ক্ষমতায় বসে দল গঠন করে। সেইল দলকে জিতিয়ে যে সংবিধানকে মার্শাল ল দ্বারা সংশোধন করেছিল সেগুলো আবার বৈধতা দেওয়ার জন্য জাতীয় সংসদে ভোট চুরির যে কালচার, ডাকাতির যে কালচার, সেই কালচারটাই শুরু করে এবং জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে পার্লামেন্ট তৈরি করে।'
উচ্চ আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এভাবে ক্ষমতা দখল অবৈধ ঘোষণাই করেছে। শুধু তাই না, একটা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, আরেকটা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির হাতেই ক্ষমতা হস্তান্তর করবে; এর বাইরে আর কোনো সরকার আসতে পারবে না। আসলে তাদের সাজা হবে। হাইকোর্টের সেই রায় অনুযায়ী, আমরাও সংবিধান সংশোধন করে সপ্তম অনুচ্ছেদে হাইকোর্টের রায় সংযুক্ত করেছি—গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা জনগণের ভোটেই বারবার নির্বাচিত হয়ে এসেছি। আওয়ামী লীগ কোনোদিন মানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া কিন্তু সরকার গঠন করে নাই। আর আমরা দেশের নির্বাচনকে; জনগণ যাতে তাদের ভোটের অধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে পারে তার জন্য নির্বাচনী আইন, আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে যতগুলো সংস্কার; সবগুলো সংস্কার কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রস্তাবেই করা হয়েছে। শুধুমাত্র জনগণের ভোট নিশ্চিত করার জন্য। কারণ ওই রাতের অন্ধকারে অস্ত্র তুলে ক্ষমতা দখলকারীরা আবার যেন কেউ জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে—সেটাই আমাদের লক্ষ্য।'
Comments