চলতি সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে: তথ্যমন্ত্রী

হাছান মাহমুদ
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি

চলতি সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, 'অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দায়িত্ব শুধু সরকারি দলের নয়। বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য ও অবাধ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা।'

তিনি আরও বলেন, 'কেউ যদি নির্বাচন বর্জন করে কিংবা প্রতিহতের অপচেষ্টা চালায় তাহলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক না করা কিংবা অগ্রহণযোগ্য করার দায়-দায়িত্ব তাদের।'

আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীতে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'আগামী নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ করার ক্ষেত্রে সরকারি দলের যেমন দায়িত্ব আছে, বিএনপিসহ বিরোধী দলেরও দায়িত্ব আছে। আমরা চাই একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ-সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী দিনের সরকার নির্বাচিত হোক।'

মন্ত্রী বলেন, 'বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে যে বৈঠক হয়েছে সেখানে নানা বিষয়ের মধ্যে অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। আমরা সেই কথাটি রাষ্ট্রদূতদের জানিয়েছি এবং অন্যদেরও এ কথা বলা হচ্ছে। আমরাও চাই দেশে আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশ নিক।'

হাছান মাহমুদ বলেন, 'দেশে বিদেশিদের আনাগোনা সবসময় ছিল। বিদেশিদের আনাগোনা বেশি হওয়া ভালো, তারা বাংলাদেশের ওপর ইন্টারেস্ট ফিল করছে। বাংলাদেশ যেহেতু ইমার্জিং ইকোনমি, বিদেশিরা একটু বেশি আসবে। আমাদের বাণিজ্য বহুমুখীকরণ হবে, আমরা আমাদের পণ্য বিক্রি করতে পারব। তাদের আগ্রহ আছে বলে আসছে, এটি দেশের জন্য ভালো।'

তথ্যমন্ত্রী বলেন, '২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি তখন আকার অনুযায়ী বাংলাদেশ ছিল পৃথিবীর ৬০তম অর্থনীতির দেশ। সেখান থেকে জিডিপির বিচারে ২৫টি দেশকে পেছনে ফেলে গত ১৪ বছরে আমরা জিডিপিতে ৩৫তম পিপিপিতে ৩১তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হয়েছি। আগামী কয়েকবছর পর বাংলাদেশের ক্রম আরও উপরে উঠবে।'

'বাংলাদেশ ইকোনোমিক্যালি ইমার্জিং টাইগার, সেজন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে। সেই আগ্রহ থেকেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা এবং বিভিন্ন অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের আনাগোনা বাংলাদেশে অতীতের তুলনায় বেড়েছে,' যোগ করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, 'যেই দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা, বাজার বড় এবং সম্প্রসারমান, সেখানে অন্যান্য দেশ যারা আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চায় তাদের আগ্রহ বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। এ কারণেই তাদের আনাগোনা, আসা-যাওয়া বেড়েছে।'

'এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপির আস্থা নেই এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তারা নির্বাচনে যাবে,' দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'মির্জা ফখরুল একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে মূর্খের মতো বারবার সরকারের অধীনে নির্বাচন কেন বলেন সেটিই হচ্ছে আমার প্রশ্ন? নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকার তখন শুধু ফ্যাসিলিটেটরের ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনকালীন সময়ে যে সরকার দায়িত্বে থাকে পুলিশের একজন কনস্টেবল বদলি করারও ক্ষমতা থাকে না তাদের। সেই নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যেমন একটি পক্ষ, বিএনপিও একটা পক্ষ। আমরা সবাই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি।'

তিনি বলেন, 'পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাই। ওনারা পাকিস্তানকে কেন এত অনুকরণ করেন সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন? বাংলাদেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ সব সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও ঠিক সেভাবে নির্বাচন হবে। চলতি সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। পাকিস্তানের আদলে স্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই।'

তিনি বলেন, '২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি যাবে না, সেই দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্য থেকে নির্বাচনে গেছে। ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। সুতরাং ২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে যদি কোনো প্রশ্ন থাকে এর দায়-দায়িত্ব বিএনপি এবং তার মিত্র যারা নির্বাচন প্রতিহতের অপচেষ্টা চালিয়েছে। ৫০০ নির্বাচনী কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিল, বেশ কয়েকজন নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ অনেক মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল তারা।'

Comments

The Daily Star  | English
explanations sought from banks for unusual USD rates

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago