যশোরে প্রধানমন্ত্রীর আগামীকালের জনসভায় ৮ লাখ লোক সমাগমের প্রস্তুতি

প্রধানমন্ত্রী.jpg
ছবি: বাসস/ ফাইল ছবি

আগামীকাল বৃহস্পতিবার যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। প্রায় ৫ বছর পর যশোরে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠেয় এই জনসভায় অন্তত ৮ লাখ লোক সমাগমের লক্ষ্য নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। 

দলের স্থানীয় নেতাদের দাবি, এই জনসভা ঘিরে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। ইতোমধ্যে জেলার ৮ উপজেলা-পৌরসভা ও ৯৩টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা গণসংযোগ চালিয়েছেন জনসভা সফল করার জন্য।

আগামীকাল  যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। সর্বশেষ ৫ বছর আগে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর যশোর ঈদগাহ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন তিনি।

১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর একই স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রায় ৫০ বছর পর সেখানেই ভাষণ দিতে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে কোম্পানির মাইকে ভাষণ দিয়ে জাতিকে জাগ্রত করেছিলেন, সেই কলরেডির মাইকেই ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রীর আগমনের বার্তায় শুধু যশোর নয়, গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

দলের নেতাদের ভাষ্য, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি যশোরের সাধারণ মানুষের ভেতরেও নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল স্থান, যশোর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা, ভবদহের জলাবদ্ধতার সমস্যা নিরসন, বেনাপোল বন্দরকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক জোন স্থাপন ও মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামে সাগরদাঁড়িতে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ একগুচ্ছ দাবি নিয়ে রাজপথে আছেন তারা।

যশোর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ জানান, এসব দাবির বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে ইতোমধ্যে রাজপথে মানববন্ধন, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদানের মত কর্মসূচি পালন করেছেন।

এদিকে জনসভা সামনে রেখে একাধিকবার স্টেডিয়াম এলাকা পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রী। সমাবেশস্থলটিকে নিরাপদ করে তোলার লক্ষ্যে পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরাও যশোরে অবস্থান করছেন।

যশোর জেলা স্টেডিয়ামের আমেনা খাতুন ক্রিকেট প্যাভেলিয়নের দোতলায় চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ। নৌকা আকৃতির মঞ্চটির আকার হবে ৮০ ফুট বাই ৬০ ফুট, যার মোট আয়তন ৪ হাজার ৮০০ বর্গফুট।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভাবে স্মরণকালের ঐতিহাসিক মহাসমাবেশে পরিণত করতে যশোর স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের দেয়াল ভেঙে আব্দুর রাজ্জাক কলেজের মাঠ সংযুক্ত করে সভাস্থল বাড়নো হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ কাজটি করা হয়।

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'জনসভায় যাতে ৮ লাখ মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে পারে, সেজন্য জেলার সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা কাজ করছে। বর্তমান সরকারের আমলে জনগণ কী পেয়েছে, আগামীতে কী পাবে- এটা তারা প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে শুনবেন।

যশোর পৌরসভার মেয়র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ জানান, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে শহরের আরবপুর রেললাইনের কাছ থেকে শুরু করে স্টেডিয়াম পর্যন্ত রাস্তার ২ পাশের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ফলে পাল্টে গেছে শহরের চেহারা। মোড়ে মোড়ে নির্মাণ করা করা হয়েছে তোরণ।

যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ৪ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি হচ্ছে। এই বলয়ের মধ্যে আনা হচ্ছে গোটা জেলাকেই। বিভিন্ন সড়কে বসানো হয়েছে শতাধিক চেকপোস্ট। সভাস্থলের অদূরে ওয়াচ টাওয়ার থেকে মঞ্চসহ পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi migrants workers rights in Malaysia

Malaysia agrees to recruit 'large number' of Bangladeshi workers

Assurance will be given to ensure their wages, safety, and overall welfare, according to ministry officials

15m ago