এই সভার বার্তা শেখ হাসিনার পদত্যাগ: আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, 'চট্টগ্রাম হচ্ছে শহীদ জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ঘাঁটি এবং চট্টগ্রামবাসী তা দেখিয়ে দিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'এই সভার বার্তা এক কথায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ। চট্টগ্রামবাসী রায় দিয়েছে আওয়ামী লীগের আর সরকারে থাকার কোনো অধিকার নেই।'

আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। 

এ সময় সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'চট্টগ্রাম বার্তা দিয়েছে আপনাদের বিদায়ের পালা এসে গেছে। চট্টগ্রাম থেকে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে।'

'জনগণ আজ দেখিয়ে দিয়েছে। সমাবেশে যত না মানুষ হয়েছে, বাইরে তার দ্বিগুণ এখনো আছে। এই আন্দোলনের ফল আমরা পাবো। বিএনপির নেতাকর্মীরা সবাই এখন খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। তারা জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। দেশের মানুষের ভোটেই সরকার নির্বাচিত হবে,' বলেন তিনি।

সমাবেশে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্থানে বাঁধা দেওয়া প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'পুলিশের কিছু অংশ নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা দিয়েছে। আমি পুলিশের সবাইকে বলছি না, কিছু অংশের কথা বলছি। ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে আমাদের নেতাদের বাঁধা দিয়েছে, রাস্তায়-হোটেলে গ্রেপ্তার করেছে। তারপরও তারা জনতার স্রোত থামাতে পেরেছে কি?'

চট্টগ্রামে পোলো গ্রাউন্ডে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

তিনি বলেন, 'জনসমাবেশে এখনো লাখ লাখ মানুষ অপেক্ষা করছে, ঢুকতে পারছে না। চট্টগ্রামের জনগণ এভাবে অবস্থান নেবে, এটা অনেকেই ভাবতে পারেনি। আমার সহকর্মীরাও সন্দিহান ছিলেন সমাবেশে মানুষ হবে কি না, কিন্তু আমাদের লোকজন তা দেখিয়ে দিয়েছে।'

'এই সমাবেশ থেকে পরিষ্কার বার্তা, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করো এখনি করো,' যোগ করেন তিনি।

এ সময় তিনি শেখ হাসিনাকে "ভোটচোর" আখ্যা দিয়ে শ্লোগান দেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'যারা ভোটচুরি করেছেন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লুটের মালের উচ্ছিষ্টাংশ খাবার জন্য তাদের এই সমাবেশ বার্তা দিয়েছে, মানুষের বিপক্ষে গিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকারি কর্মকর্তা কেউ দাঁড়াতে পারবে না। মৃত-জীবিত যেভাবেই হোক ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের অধিকার আমরা ফিরিয়ে আনব।'

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, 'বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কিছুই নেই, আছে শেখ হাসিনার ইচ্ছাতন্ত্র। আমাদের নেতাকর্মীরা মার খাচ্ছে, আর পুলিশ লাঠি নিয়ে আসতে মানা করছে। সেই পুলিশ কর্মকর্তাদের বলব, ফরফর কম করেন। আপনি শেখ হাসিনার সেবক, শেখ হাসিনার বাড়ির কর্মচারী নন।

বিএনপির সমাবেশে আসার আগে বন্দুক থানায় রেখে আসবেন, আমরাও লাঠি ছাড়া আসব। আমাদের লাঠি আত্মরক্ষার জন্য। কারও মাথায় বাড়ি দেওয়ার জন্য নয়।'

বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেল ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'কথাবার্তা দায়িত্ব নিয়ে বলবেন। ভাত দিতে না পারলে, বিদ্যুৎ দিতে না পারলে, ক্ষমতায় থাকবেন কেন? শেখ হাসিনা লুটেরাদের প্রধানমন্ত্রী, খুনিদের প্রধানমন্ত্রী, জনগণের প্রধানমন্ত্রী না।'

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য খন্দকার মোশাররফ বলেন, 'গত ১৪/১৫ বছর ধরে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন গুম ও খুন করা হয়েছে, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মামলা দিয়েছেন, ৩০ লাখ লোকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন। তাও দুর্বল করতে পারেননি।'

'এত নির্যাতন করেও আওয়ামী লীগ কোনো বিএনপির নেতাকর্মীকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়াতে পারেনি,' বলেন তিনি।

'প্রশাসনের উদ্দেশে বলছি, আমাদের মানসিকভাবে দুর্বল করার চেষ্টা সফল হয়নি। যারা বাঁধা দিচ্ছেন, তারা হুশিয়ার হয়ে যান। আওয়ামী লীগকে বলছি শ্রীলঙ্কার দিকে তাকান, সেখানে জনগণ সরকারের পতন ঘটিয়েছে,' তিনি বলেন।

তিনি আরও বলেন, 'অতি উৎসাহী যারা আছেন তাদের বলছি, শেখ হাসিনা আত্মীয়-স্বজন নিয়ে পালাবে, কিন্তু আপনারা পালাতে পারবেন না।'

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'যারা বাঁধা দিচ্ছে, তাদের তালিকা করুন, মানুষ তাদের বিচার করবে। আর প্রশাসনে যারা এখনো অতি উৎসাহী আছেন, তাদের বলছি, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, হাইব্রিডের কথা শুনে আপনারা আপনাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করবেন না।'

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

12h ago