পুলিশ লাইনে গোপন বন্দিশালার সন্ধান পাওয়া গেছে: গুম কমিশন

গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য নূর খান বলেছেন, বগুড়া পুলিশ লাইনে গোপন বন্দিশালা পাওয়া গেছে। যেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে বন্দিদের এনে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হতো। 

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে কমিশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

নূর খান বলেন, পুলিশ লাইনের ভেতরে কারাগারের মতো গোপন বন্দিশালা তৈরি করে রাখা হয়েছিল। যেটি একেবারেই 'অ্যাবসার্ড' একটা ব্যাপার। সেটি আমরা বগুড়ায় পেয়েছি। আমাদের ধারণা অনেক ক্ষেত্রে এ ধরনের বন্দিশালা আরও পাবো।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নূর খান বলেন, এগুলো গত ১৫ বছরের মধ্যেই বানানো হয়েছে। সম্ভবত গত ১০-১২ বছরের মধ্যে। এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে বন্দিদের এনে রাখা হতো। জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হতো এবং এখান থেকেও অনেকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে গুম কমিশন অফ ইনকোয়ারির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুমের শিকার হয়ে ফিরে না আসা ৩৩০ ব্যক্তির বর্তমান অবস্থা বা ভাগ্য সম্পর্কে অনুসন্ধান চলমান আছে। 

তিনি বলেন, গুম কমিশন অফ ইনকোয়ারিতে আজ পর্যন্ত ১ হাজার ৭৫২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। যার মধ্য থেকে প্রায় ১ হাজার অভিযোগ ও তার সঙ্গে সংযুক্ত কাগজপত্রের যাচাই- বাছাই প্রাথমিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কমিশনে আগত ২৮০ জন অভিযোগকারীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। প্রায় ৪৫ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে।

কমিশনের সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপার ও বিজিবির সেক্টর কমান্ডারদের কাছ থেকে গত ৫ আগস্ট এর পর ভারত হতে বাংলাদেশে পুশইন করা ব্যক্তিদের তথ্য চাওয়া হলে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ হতে ১৪০ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। এই তথ্যের প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে কোনো গুমের শিকার ব্যক্তির নাম এখনও পাওয়া যায়নি। পুলিশ এবং বিজিবি'র পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তবে গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকার ধামরাইয়ের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ্ নামক গুমের শিকার ব্যক্তিকে চাপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর বর্ডার দিয়ে পুশইন করা হয়েছে বলে আমরা অবগত এবং এ বিষয়ে কমিশনের অনুসন্ধান চলমান আছে। 

এসময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

7h ago