ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যটন বন্ধ, উদ্বিগ্ন সেন্টমার্টিনের ব্যবসায়ীরা
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক ভ্রমণ বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এতে আয়ের প্রধান উৎস বন্ধ হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে দ্বীপটির ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের মধ্যে। আর্থিক ক্ষতি কমাতে অন্তত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটিতে পর্যটন চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সেন্টমার্টিন মারমেইড রিসোর্টের মালিক তৈয়ব উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেন্টমার্টিনের মানুষ মাত্র দুই মাসের আয় দিয়ে বছরের বাকি ১০ মাস টিকতে পারবে না। আমরা সরকারের কাছে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি খোলা রাখার দাবি জানাই।'
'মার্চ থেকে রমজান শুরু হবে। তখন এমনিতেই পর্যটক আসবে না। তাই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া হোক।'
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩১ জানুয়ারি থেকে দ্বীপগামী সব পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে এবং ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
সেন্টমার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ কমিটির আহ্বায়ক ও কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, 'সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন। এরপর সব পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ থাকবে।'
গত ১ ডিসেম্বর কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটি থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক পরিবহন চালু হয়। বর্তমানে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে ছয়টি জাহাজ চলাচল করছে।
সাধারণত ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে পর্যটন মৌসুম চলে। অক্টোবরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে বাকি ছয় মাস এই সেবা বন্ধ থাকে।
তবে এবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ফলে নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে সীমিত পর্যটন চালু ছিল। নভেম্বরে রাতযাপন নিষিদ্ধ থাকলেও ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতিদিন মাত্র দুই হাজার পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারছেন। ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বীপে পর্যটন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দ্বীপের হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি এম এ রহিম জিহাদি বলেন, 'এটি দ্বীপের জন্য নজিরবিহীন সংকট। পর্যটন বন্ধ হলে হাজারো মানুষ দুর্ভোগে পড়বে।'
সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসেন ইসলাম বাহাদুর বলেন, 'সরকারের কাছে আবেদন, অন্তত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে পর্যটন চালু রাখুন। এতে দ্বীপের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতি কিছুটা কম হবে।'
এর আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করত। তবে নাফ নদীতে পলি জমে যাওয়া এবং মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার কারণে সম্প্রতি টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
Comments