শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির জনশুনানি

‘পুরোনো চাঁদাবাজদের স্থান দখল করে নিচ্ছে নতুন চাঁদাবাজরা’

চট্টগ্রামের একটি হোটেলে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির জনশুনানি। ছবি: রাজিব রায়হান/স্টার

'দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। পুরোনো চাঁদাবাজরা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর নতুন চাঁদাবাজরা তাদের স্থান দখল করে নিচ্ছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে শিল্প-কারখানা সবখানেই চাঁদাবাজি চলছে নতুনরূপে।'

বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির জনশুনানি- চট্টগ্রাম পর্বের অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
  
নগরীর তারকা হোটেল পেনিনসুলায় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত জনশুনানির আলোচনায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দুই শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

এতে বক্তারা বলেন, দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে হলে শিক্ষিত বেকার যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। জন্ম-নিবন্ধন থেকে শুরু করে পাসপোর্ট, ট্রেড লাইসেন্স, ভূমি রেজিস্ট্রেশন সব কিছুতেই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে। এসব জটিলতার কারণে সাধারণ মানুষ যেমন বিড়ম্বনায় পরেন, তেমনি অর্থনৈতিক চাপেও পড়তে হয় ভুক্তভোগীদের। 
 
জনশুনানিতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, 'রাজনীতির বদল করলাম না, শুধু রাজা বদল করলাম, এটা হতে পারে না। যারা আত্মত্যাগ করেছে তাদের চিন্তা ছিল রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে, সেটা হলে আমরা এক অত্যাচারীর বদলে নতুন অত্যাচারীর আবির্ভাব দেখতে চাই না।'

ড. দেবপ্রিয় আরও বলেন, 'আপনাদের আলোচনা থেকে এটাই উঠে এসেছে যে, রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গ কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। যারা আইন প্রণয়ন করার কথা তারাও যুক্ত হয়ে গেছেন, যারা আইন প্রয়োগ করার কথা তারাও যুক্ত হয়েছেন দুর্নীতিতে। এমনকি যারা উর্দি পরা, তারাও যুক্ত হয়েছেন। এখান থেকে বোঝা যায়, সামাজিকভাবে যে সমস্যা মোকাবিলা করছি তার আয়তন ও ব্যাপ্তি কতটুকু।'

অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, 'এমন পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য প্রতিটি নাগরিককে অংশগ্রহণ করতে হবে। কেউ এসে আমাদের জন্য এটা করে দেবে, এটা হবে না। আমাদের নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে আমাদের নাগরিক অধিকারকে উসুল করে নিতে হবে। এটার জন্য নির্বাচন যেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রতিনিয়ত নাগরিক সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাপ্যতা বুঝে নেওয়ার এটাই সুযোগ। এই সুযোগ যদি আমরা হারিয়ে ফেলি, এমন সুযোগ আবার আসবে কি না তা আমি জানি না।'

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জনশুনানিতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ডীন, অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) সিইও ফেরদৌস আর বেগম, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ উপস্থিত ছিলেন। 
 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

4h ago