ঘোষণা দিয়ে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ, জিডির পরও ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ঘোষণা দিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে ওই ছাত্রীর বাবা ফুলবাড়ী থানায় অভিযোগ করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নওয়াবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ওই গ্রামে ৩০টি হিন্দু পরিবার বসবাস করে। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে পাড়ায় কয়েকটি গাছে পোস্টার সেঁটে দেয় দুর্বৃত্তরা। তাতে বলা হয় '৭ দিনের মধ্যে এই বাড়ির মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে মেয়েকে মুসলমান করা হবে।'
এ ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর গ্রামের একজন বাসিন্দা রঞ্জিত চন্দ্র ফুলবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনুমা তারান্নুমের নির্দেশে গাছ থেকে পোস্টারগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গতকাল বিকেল ৫টার দিকে কোচিং সেন্টার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়। গ্রামের মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে মাদকদ্রব্য কারবারি আলিনুর রহমান (৩২) ও তার সহযোগীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
অপহরণের শিকার মেয়েটির বাবা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার মেয়েটা পড়াশোনায় খুব মনোযোগি। মেয়েটাকে বাড়ি ফেরার পথে আলিনুর তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে অপহরণ করেছে। আমি থানায় অভিযোগ করেছি।'
তিনি বলেন, 'আমাদের গ্রামের রাস্তায় হুমকি দিয়ে চিঠি দেখে আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে যাই। হুমকিদাতা তার পরিকল্পনা ঠিকই বাস্তবায়ন করল। আমি আমার মেয়েকে ফেরত চাই।'
গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত চন্দ্র দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা ৪ সেপ্টেম্বর থানায় জিডি করেছিলাম। পুলিশ আন্তরিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখলে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করতে পারত। তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হলে মেয়েটা অপহৃত হতো না।'
'গ্রামের একটা মেয়ে অপহরণ হওয়ায় অন্যান্য অভিভাবকরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন,' তিনি বলেন।
ফুলবাড়ী থানার ওসি নওয়াবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, পুলিশ জিডিটি তদন্ত করেছিল এবং ওই হিন্দু গ্রামের দিকে নজর রেখেছিল।'
'অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি,' তিনি বলেন।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন।
অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
Comments