রাষ্ট্র পুনর্গঠনে ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’ গঠন

আজ রোববার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। ছবি: মো. আব্বাস

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে রাষ্ট্রের সংস্কার ও পুনর্গঠনের লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

আজ রোববার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীকে আহ্বায়ক ও আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব করে এ কমিটি আত্মপ্রকাশ করেছে।

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ৫৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক কমিটির ঘোষণা দেন নাসির।

কমিটির মুখপাত্র করা হয়েছে সামান্তা শারমিনকে এবং বাকি ৫২ জনকে কমিটির সদস্য করা হয়।

কমিটির প্রাথমিক কাজ হবে-

১। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হওয়া সামষ্টিক অভিপ্রায় ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সমুন্নত রাখা।

২। ছাত্র-জনতার ওপর সংঘটিত নির্মম হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা।

৩। রাষ্ট্রের জরুরি সংস্কার ও পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা ও জবাবদিহিতার পরিসর তৈরি করা।

৪। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগের সাথে আলোচনা, মত বিনিময় ও গণমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বস্তরের জনতাকে সংহত করার লক্ষ্যে কাজ করা।

৫। দেশের সর্বস্তরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বকে সংহত করে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা সমুন্নত করে রাখার লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী কাঠামো ও শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা।

৬। জনস্বার্থের পক্ষে নীতি নির্ধারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার মানুষ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক সংলাপের আয়োজন করা।

৭। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতি নির্ধারণী প্রস্তাবনা তৈরি ও সেটা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক পদক্ষপ গ্রহণ করা।

৮। গণপরিষদ গঠন করে গণভোটের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরির জন্য গণআলোচনার আয়োজন করা।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় নাগরিক কমিটি জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ও বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে ফ্যাসিবাদী রেজিমের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে জনগণের আকাঙ্ক্ষার সরকার গঠিত হয়েছে। এই অভ্যুত্থানের ঘোষিত লক্ষ্য-ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এখনো দীর্ঘ রাজনৈতিক ও নীতি নির্ধারণের লড়াই দাবি করে।

গত ৮ আগস্ট গঠিত সরকারকে যুগপৎ সহযোগিতা করা জবাবদিহিতার আওতায় আনা, তদুপরি জনস্বার্থের পক্ষে নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে নাগরিক দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সংহতি ও প্রতিরোধের চেতনা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার শক্তি। এই নতুন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীকে স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে পূর্ণ বিজয় অর্জন করতে হবে। গণহত্যাকারীদের যথাযথ বিচার, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন, জনস্বার্থের প্রতি সংবেদনশীল নীতি নির্ধারণ নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পূর্বশর্ত।

জাতীয় নাগরিক কমিটি শিগগির দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সঙ্গে আলোচনা করবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন-আরিফুল ইসলাম আদীব, সাইফ মোস্তাফিজ, মনিরা শারমিন, নাহিদা সারোয়ার চৌধুরি, সারোয়ার তুষার, মুতাসিম বিল্লাহ, আশরাফ উদ্দিন মাহদি, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, অনিক রায়, জাবেদ রাসিন, মো. নিজাম উদ্দিন, সাবহানাজ রশীদ দিয়া, প্রাঞ্জল কস্তা, মঈনুল ইসলাম তুহিন, আব্দুল্লাহ আল আমিন, হুযাইফা ইবনে ওমর, শ্রবণা শফিক দীপ্তি, সায়ক চাকমা, সানজিদা রহমান তুলি, আবু রায়হান খান, মাহমুদা আলম মিতু, অলিক মৃ, সাগুফতা বুশরা মিশমা, সৈয়দ হাসান ইমতিয়াজ, তাসনিম জারা, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, মো. আজহার উদ্দিন অনিক, মো. মেসবাহ কামাল, আতাউল্লাহ, এস. এম. শাহরিয়ার, মানজুর-আল- মতিন, প্রীতম দাশ, তাজনূভা জাবীন, অর্পিতা শ্যামা দেব, মাজহারুল ইসলাম ফকির, সালেহ উদ্দিন সিফাত, মুশফিক উস সালেহীন, তাহসীন রিয়াজ, হাসান আলী খান, মো. আব্দুল আহাদ, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, মশিউর রহমান, আতিক মুজাহিদ, আবদুল্ল্যাহ আল মামুন ফয়সাল, মো. ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, তানজিল মাহমুদ, এস.এম. সুজা, মো. আরিফুর রাহমান, কানেতা ইয়া লাম লাম, সৈয়দা আক্তার, স্বর্ণা আক্তার, সালমান মুহাম্মাদ মুক্তাদির, আকরাম হুসেইন।

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

16h ago