কুড়িগ্রামে বাঁধ ধসে ১৭ গ্রাম প্লাবিত

কুড়িগ্রামে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় দুধকুমার নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। শনিবার বিকেলে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মিয়াপাড়া গ্রাম থেকে তোলা ছবি। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

দুধকুমার নদীর পানির তোড়ে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় বেড়িবাঁধের দুটি অংশে প্রায় ১২০ মিটার ধসে গেছে। গতকাল শনিবার দুপুর থেকে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকছে। এতে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

নদীর পানিতে প্লাবিত গ্রামগুলো হলো- বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মিয়াপাড়া, ওয়াপদা পাড়া, বামনডাঙ্গা, ধনিটারী, তেলিয়ানী, মালিয়ানি, বড়মানী, সেনপাড়া, পাটেশ্বরী, মমিনগঞ্জ, বোয়ালের ডারা, অন্তাইপাড় এবং নাগেশ্বরী পৌরসভার হরিরপাট, ভৈষতুলি, সানজুয়ার ভিটা, ভুষিটারী ও ফকিরটারী গ্রাম।

মিয়াপাড়া গ্রামের লোকজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গতকাল দুপুর থেকে দুধকুমার নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। সন্ধ্যার পর থেকে পানির গতি বেড়েছে। গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে ২-৩ ফুট পানি প্রবেশ করেছে। গ্রামের অনেক পরিবারের লোকজন আসবাবপত্র, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।

মিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন (৬৫) বলেন, গতকাল সন্ধ্যার মধ্যে ঘরের ভেতর ৪-৫ ফুট পানি প্রবেশ করেছে। তিনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে এসেছেন। তার দুই বিঘা জমির সবজি ও ২০ শতাংশ জমির আমন ধানের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে যেভাবে নদীর পানি প্রবেশ করছে তাতে গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে তিন হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বেড়িবাঁধটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বাঁধটি সংস্কার করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে বহুবার অনুরোধ করা হয়েছিল কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।'

বাঁধভাঙার কারণে বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন ও নাগেশ্বরী পৌরসভার ১৭টি গ্রামে বহু ক্ষতি হবে,' বলেন তিনি।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান গত রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মিয়াপাড়া এলাকায় বাঁধ নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে নদীর পানি প্রবাহ ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে। পানির লেভেল বিপৎসীমার ওপরে থাকায় পানি প্রবল গতিতে প্রবাহিত হচ্ছে।

নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ বলেন, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আশপাশের গ্রামের লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। তাদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ভাঙা বাঁধ দিয়ে নদীর পানি প্রবেশ ঠেকানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

ভাঙা বাঁধ দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন ও পৌরসভার কয়েকটি গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

5h ago