উজানের ঢল, টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে উত্তরের ২৬ নদীর পানি

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বাড়ায় নদীপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ছবি: এস দিলীপ রায়/ স্টার

উজানের পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা-ধরলা-দুধকুমারসহ ২৬টি নদ-নদীর পানি। প্লাবিত হয়েছে চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামি ২৪ ঘণ্টায় নদীপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হলেও রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তা ছিল ৭ সেন্টিমিটার ওপরে।

ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার, দুধকুমারের পানি কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রামের শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা এলাকার কৃষক আজিজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সোমবার দুপুর থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। তাদের গ্রামে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। তার ঘরে নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি আরেকটু বাড়লে তাদেরকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিতে হবে।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা গ্রামের কৃষক সহিদার রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ধরলা নদীর পানি হুহু করে বাড়ছে। যেকোন সময় ধরলা নদীর পানিতে তাদের গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিস্তা নদীর মূল পয়েন্টে ডালিয়ায় পানি প্রবাহ বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। যেহেতু অনবরত বৃষ্টি হচ্ছে তাতে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে যেকোন মুহূর্তে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। তবে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার বুকে বিপুল পরিমানে পলি জমা হয়েছে। এতে নদীতে পানি ধারণক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। একটু পানি বাড়লেই তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে এখনো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনও বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। এ কারণে অন্যান্য নদ-নদীর পানি সহজেই ব্রহ্মপুত্র নদে যাচ্ছে। উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসছে। এতে যেকোন সময় সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নদীপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এখনো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও নদীপাড়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
 Al Bakhera killings Al Bakhera killings

Killings in Chandpur: Water transport workers go on strike

Water transport workers has started an indefinite strike from midnight

21m ago