দিনাজপুরে হাটে গরু উঠেছিল ৩ হাজার, ৮০ ভাগই বিক্রি হলো না

কাহারোল উপজেলার আব্দুস সালাম তার ট্রাক্টরে করে দশটি গরু হাটে এনেছিলেন। কিন্তু সারাদিনে মাত্র দুটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন তিনি। অবিক্রীত গরুগুলোকে তিনি আবার ট্রাক্টরে করেই ফিরিয়ে নিয়ে যান।
ক্রেতা না থাকায় হাট থেকে গরু ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রোববার সন্ধ্যায় দিনাজপুর শহরের যোগেন বাবুর মাঠের দৃশ্য। ছবি: স্টার

দিনাজপুরে ক্রেতার চেয়ে বেশি গরু হাটে আসায় শেষ পর্যন্ত এর অনেকগুলোকেই ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। আজ রোববার সন্ধ্যায় শহরের যোগেন বাবুর মাঠ থেকে এরকম শত শত গরু নিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

ঈদের আগে একদিনের জন্য শহরের বালুবাড়ী এলাকায় যোগেন বাবুর মাঠে আজ পশুর হাট বসেছিল। শনিবার রাত থেকেই জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত গরু হাটে আনেন ব্যবসায়ীরা। তাদের আশা ছিল শেষ মুহূর্তের এই হাটে তাদের পশু বিক্রি হবেই। কিন্তু দিনশেষে ব্যবসায়ীদেরকে হতাশ হতে হয়েছে।

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার আব্দুস সালাম তার ট্রাক্টরে করে দশটি গরু হাটে এনেছিলেন। কিন্তু সারাদিনে মাত্র দুটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন তিনি। অবিক্রীত গরুগুলোকে তিনি আবার ট্রাক্টরে করেই ফিরিয়ে নিয়ে যান।

সালাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তার প্রতিটি গরু দাম ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজারের মধ্যে। তুলনামূলক কম দামেও গরু বিক্রি করতে না পেরে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন।

আরেক বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বিরল থেকে এনেছিলেন পাঁচটি গরু নিয়ে। তিনি একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। বাজারে ক্রেতা কম থাকায় গরু বিক্রি হয়নি বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, হাটে প্রায় তিন হাজার গরু উঠেছিল। সেই তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা ছিল অনেক কম। তার হিসাব অনুযায়ী, সারা দিনে প্রায় পাঁচশ গরু বিক্রি হয়েছে।

এই বাজারের ইজারাদার সাগর জানান, হাটে প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার গরু আনা হলেও প্রায় ৮০ ভাগ গরু বিক্রি হয়নি। সন্ধ্যার দিকে একদমই ক্রেতা না থাকায় ব্যবসায়ীরা ফিরে যান।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই হাটের দেখাশুনা করলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ ধরনের ক্রেতা সংকট দেখেননি বলে জানান তিনি।

বিগত বছরগুলোতে এই হাটে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বেচাকেনা হলেও আজ ছিল ব্যতিক্রম। ক্রেতা না থাকায় বিকেলের মধ্যেই গরুর ব্যবসায়ীরা ফিরে যেতে শুরু করেন।

তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, এবার গরুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। গরু কিনতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি একটি গরু কেনার ব্যাপারে মনস্থির করলেও বিক্রেতা বেশি দাম চাওয়ায় আর কেনা হয়ে ওঠেনি। বিক্রেতা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দাম চেয়েছিলেন। তিনি ৭৫ হাজার টাকা বলেছিলেন।

বিকেলে হাট ঘুরে ৫০ থেকে ৬০ জন ব্যবসায়ীকে গরু ফেরত নিয়ে যেতে দেখা যায়। তাদের অনেকের মুখেই হতাশা স্পষ্ট।

হাটের ইজারাদার জানান, এখানে সর্বনিম্ন ৪৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ ১৮ হাজার টাকায় গরু বিক্রি হয়েছে।

Comments