'মেয়ের সঙ্গে আজ প্রথম দেখা, মেয়েও হয়তো আমার জন্য অপেক্ষা করছে'
সোমালি জলদস্যুদের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার দুদিন পর এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি যখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরের পথে তখনই মেয়ের বাবা হওয়ার খবর পান জাহাজের চিফ কুক মো. শফিকুল ইসলাম।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে নামার পর থেকেই মেয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন তিনি। তাকে নিতে এসেছিলেন ভাই ও ভাইয়ের শ্বশুর।
দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'আমি সর্বশক্তিমানের কাছে কৃতজ্ঞ। নিরাপদে দেশে পৌঁছাতে পেরেছি। জাহাজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এসআর-এর প্রতিও কৃতজ্ঞ।'
প্রথম বাবা হওয়ার প্রসঙ্গ এলে হাস্যজ্বল মুখে শফিকুল বলেন, 'সবচাইতে বড় বিষয় মেয়ের বাবা হয়েছি। অবশেষে, তার সাথে দেখা হবে, ইনশাআল্লাহ। এই সুখানুভুতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।'
ভারত মহাসাগর থেকে কেএসআরএম গ্রুপের এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ গত ১২ মার্চ ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার দস্যুরা। জলদস্যুদের হাতে জিম্মির খবরে জাহাজের নাবিকদের পরিবারে নেমে আসে দুশ্চিন্তা। মুক্তিপণ দিয়ে ৩৩ দিনের মাথায় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়।
১৬ই এপ্রিল মো. শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সাজিয়া আলমের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। জাহাজের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, 'শফিকুল তার প্রথম সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু তিনি আমাদের ছেড়ে একা দেশে ফিরে আসতে চাননি। তিনি তার কর্তব্য পালনে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন।'
বাড়িতে পৌঁছে শফিকুল প্রথমে অসুস্থ বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন, পরে স্ত্রীর কাছে গিয়ে তার শিশুকে কোলে তুলে নেন বলে জানান তার ভাই সাইফুল।
জাহাজটি মুক্তির পর প্রথমে আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। ১৩ দিনের মাথায় জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছাল। জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার এক মাসের মাথায় ঘরে ফিরলেন নাবিকেরা।
Comments