মত প্রকাশে অনিরাপদ বোধ করে দেশের ৭১.৫ শতাংশ তরুণ-তরুণী: জরিপ
দেশের ৭১ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণ-তরুণী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো পাবলিক প্ল্যাটফর্মে মত প্রকাশের সময় অনিরাপদ বোধ করেন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের (সিপিজে) সহযোগিতায় বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টারের (বিওয়াইএলসি) করা 'ইয়ুথ ম্যাটারস সার্ভে ২০২৩' জরিপে এমন ফলাফলই উঠে এসেছে।
দেশের ১৬-৩৫ বছর বয়সী পাঁচ হাজার ৬০৯ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর ফেসবুকের মাধ্যমে জরিপ চালিয়ে বৃহস্পতিবার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে দেখা গেছে, উত্তরদাতাদের ৫৫ শতাংশ মনে করেন বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ নয়। অন্তত ৫৭ শতাংশ মনে করেন গত পাঁচ বছরে দেশে বিচার ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৮ বছরের বেশি ৭২ শতাংশ তরুণ-তরুণী আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
জরিপের প্রধান গবেষক হোসেন মোহাম্মদ ওমর খাইয়ুম এক অনুষ্ঠানে ফলাফল উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, 'জরিপের ফল অনুযায়ী দেশের ৮৮ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণ-তরুণী দুর্নীতিকে দেশের উন্নয়নের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। একইসঙ্গে, ৬৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেকারত্বকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করছেন।'
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক সংকটকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বলে জানান তিনি।
ফলাফলে দেখা যায়, দেশের ৬৮ দশমিক ৬ তরুণ-তরুণী মনে করেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা কর্মসংস্থান বা ব্যবসায়িক উদ্যোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে সহায়ক নয়।
৬১ দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতার মতে, তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মূল্যস্ফীতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আর ৪০ শতাংশ উত্তরদাতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে চাকরির নিরাপত্তাহীনতা।
অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৭৩ দশমিক ৪ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
ফলাফলে আরও দেখা গেছে, দেশে এসব চ্যালেঞ্জের কারণে ৪২ দশমিক ৪ শতাংশ তরুণ-তরুণী বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করে।
বিওয়াইএলসি'র নির্বাহী পরিচালক তাহসিনাহ আহমেদ বলেন, 'এ অবস্থার উন্নতির জন্য নেতৃত্ব, যোগাযোগ ও সফট স্কিলের ওপর আরও প্রশিক্ষণের কথা বলেছেন তরুণরা। তাদের প্রায় ৫৮ শতাংশ শিক্ষকদের মান উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।'
'আশার কথা এই যে এতসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও প্রায় ৫৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী এখনো বাংলাদেশে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'অবস্থার পরিবর্তন হলে ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ দেশে ফিরতে চান, এতেও আমরা অভিভূত।'
জীবিকা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, সুশাসন, শান্তি ও ন্যায়বিচার, অভিবাসন, তথ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি-এই আটটি বিষয়ের ওপর এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।
Comments