চট্টগ্রামে দেশের প্রথম টানেল উদ্বোধন, জনমনে উচ্ছ্বাস
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল' উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষ্যে তার চট্টগ্রাম সফরকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
আজ শনিবার সকাল ১১টা ৪২ মিনিটে বন্দরনগরীর পতেঙ্গা এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়া চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনের পর টানেলের দক্ষিণ প্রান্তে আনোয়ারা উপজেলায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দিতে টানেলে নিজের হাতে টোল পরিশোধ করে পার হন প্রধানমন্ত্রী।
আনোয়ারা উপজেলার কেইপিজেড মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী।
ইতোমধ্যেই সমাবেশস্থলে লাখো মানুষ সমাগম হয়েছে।
সাধারণ মানুষের উৎসাহের কথা বিবেচনা করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) শহরের বিভিন্ন জায়গায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।
আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারের জন্য নগরীর জিইসি মোড়ে আয়োজন করা হচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে চসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং চসিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন বলেন, 'আমরা দেখেছি যে মানুষ টানেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে অনেক বেশি উৎসাহী। তাই নগরীর বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
যোগাযোগ করা হলে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফর এবং দেশের প্রথম টানেল উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে জনগণের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা বিরাজ করছে এবং তারা অনুষ্ঠানটি সরাসরি দেখতে চান।'
তিনি বলেন, 'জনগণের উৎসাহের কথা বিবেচনা করে আমরা বন্দর নগরীর বিভিন্ন স্পটে বড় পর্দায় অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শহরের ছয়টি স্পটে বড় পর্দায় অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করছি।'
তিনি আরও বলেন, 'স্পটগুলো হলো নিউমার্কেট, কাজির দেউড়ি, জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ বাদামতলা মোড়, সিইপিজেড মোড় এবং বহদ্দারহাট মোড়। এ ছাড়া, এলইডি ডিসপ্লেতে দুটি মোবাইল ট্রাকের মাধ্যমেও অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করা হচ্ছে।'
এই উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগরীকে বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়েছে।
আজ কেইপিজেড মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় বিপুল পরিমাণ মানুষের সমাগম করতে উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট।
প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফরকে স্বাগত জানিয়ে কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরবর্তী দুই উপজেলা আনোয়ারা ও কর্ণফুলী পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।
আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মান্নান জানান, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে বিশাল সমাবেশে পরিণত করতে উপজেলায় ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন তারা।
তিনি বলেন, 'আশা করছি কয়েক লাখ মানুষ আজ সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।'
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, 'প্রথমে দুপুর ২টায় সমাবেশের কথা থাকলেও পরে তা নির্ধারণ করা হয় সকাল ১০টায়।'
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারা উপজেলা থেকে টানেল এবং আরও কিছু বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন এবং তাই সমাবেশের মূল মঞ্চের পাশে আলাদা মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর জনসভা এবং দেশের প্রথম টানেল উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে যতটা উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে, আমরা আশা করছি কয়েক লাখ মানুষ সমাবেশে যোগ দেবেন। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছি।'
Comments