শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন আজ

ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অ্যাভিয়েশন হাবে পরিণত করার লক্ষ্যে 'স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতার সংযোগ' স্লোগান নিয়ে আজ শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন করবেন। বিমানচালক ও সংশ্লিষ্টরা এই উদ্দীপনাপূর্ণ মুহূর্তের জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান গতকাল বাসসকে বলেন, 'আমরা বলতে পারি তৃতীয় টার্মিনালটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশকে একটি অ্যাভিয়েশন হাব হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রথম মাইলফলক।'

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন স্থাপনা থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন দৃশ্যমান টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করবেন।

সিএএবি চেয়ারম্যান বলেন, নতুন টার্মিনালের ৯০ শতাংশ কাজ সফট লঞ্চিংয়ের জন্য সম্পন্ন হয়েছে এবং শনিবার থেকে এয়ারলাইনসগুলো টার্মিনালের নতুন পার্কিং পে ব্যবহার করতে পারবে।

সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন ও ক্যালিবারেশন সম্পন্ন হওয়ার পর তৃতীয় টার্মিনালটি আগামী বছরের শেষে যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণরূপে চালু হবে।

সিএএবি প্রধান বলেন, 'নতুন টার্মিনালটি বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা এবং যাত্রী পরিষেবা দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি পাল্টে দেবে।'

তিনি বলেন, পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলোসহ থার্ড টার্মিনালের ফ্লোর ও সিলিংয়ে নজরকাড়া প্যাটার্নের বৈশিষ্ট্যগুলো খুবই পরিশীলিত।

সিএএবি চেয়ারম্যান বলেন, 'যাত্রীরা নতুন টার্মিনালের বিশ্বমানের সুবিধার প্রশংসা করবেন, যা আমরা এখানে আগে কখনো পাইনি।'

তৃতীয় টার্মিনালের ডাবল এন্ট্রি ব্রিজসহ ১২টি বোর্ডিং গেট আগামী বছরের মধ্যে চালু হবে এবং পরবর্তী ১৪টি বোর্ডিং সেতু পরবর্তীতে স্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়। সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) অবশিষ্ট অর্থায়ন করেছে।

পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে তৃতীয় টার্মিনালনালে দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের একটি ফ্লোর স্পেস, ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ৫৯টি আগমন ইমিগ্রেশন ও তিনটি ভিআইপি ইমিগ্রেশন ডেস্ক রয়েছে।

তৃতীয় টার্মিনাল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হওয়ার পর ঢাকা বিমানবন্দরের বার্ষিক যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এতে বার্ষিক যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্ষমতা হবে ২৪ মিলিয়ন (পুরানো টার্মিনালসহ), যা এখন আট মিলিয়ন এবং বিমানবন্দরটি প্রতি বছর পাঁচ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডেল করতে পারে।

৩৭টি নতুন এয়ারক্রাফ্ট পার্কিং এরিয়া এবং অ্যাপ্রোন এলাকায় সংযোগকারী দুটি ট্যাক্সিওয়ের নির্মাণকাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

তৃতীয় টার্মিনালটি একটি মাল্টিমোডাল পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে যাত্রীরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ ও প্রস্থান করতে সক্ষম হয়।

নতুন টার্মিনালটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভূগর্ভস্থ রেলপথ (এমআরটি-৫, কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর অংশ) ও একটি ভূগর্ভস্থ টানেলের মাধ্যমে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।

এ ছাড়া আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে আন্ডারগ্রউন্ড টানেলের মাধ্যমে হজযাত্রীরা তৃতীয় টার্মিনালে যেতে পারবেন।

তৃতীয় টার্মিনালটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের অধীনে একটি জাপানি কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তৃতীয় টার্মিনালের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রমের আগে বিভিন্ন বিদেশি এয়ারলাইনস ঢাকা বিমানবন্দর থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে চায়, যা দেশের অ্যাভিয়েশন সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh at a historic crossroads: Dr Kamal Hossain

Eminent jurist Dr Kamal Hossain today said Bangladesh stands at a turning point of history following recent mass uprisings

1h ago