বেতন না পেয়ে শ্রমিক অসন্তোষ, সাভারে ২ পোশাক কারখানা বন্ধ

বন্ধ ঘোষণা করা পোশাক কারখানাটির সামনে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। ইনসেটে কারখানা বন্ধের নোটিশ। ছবি: সংগৃহীত

শ্রমিক অসন্তোষ এবং শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের জেরে ঢাকার সাভারে প্রাইড গ্রুপের ২টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ রোববার সাভারের উলাইল এলাকায় অবস্থিত এইচ আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং ফ্যাশন নীট লি. নামের কারখানা ২টি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

আজ সকালে কারখানা ২টির গেটে কারখানা বন্ধের একাধিক নোটিশ দেখা গেছে।

কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মনিরুল ইসলামের সই করা নোটিশে কারখানা বন্ধের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, 'চলমান বিবিধ সমস্যা এবং সাম্প্রতিক অরাজকতা কারখানার মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত হওয়ার কারণে' ১৩ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।

শ্রমিকদের জুলাই মাসের সব বকেয়া মজুরি কারখানা খোলার আগেই পরিশোধ করা হবে বলেও ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

শ্রমিকদের না জানিয়ে এবং জুলাই মাসের বেতন পরিশোধ না করেই গতকাল ১২ আগস্ট কারখানাটি ১ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় কারখানার সামনে অবস্থানকালে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেটে অন্তত ২০ শ্রমিক আহত হয়েছেন।

কারখানা ২টি বন্ধ ঘোষণা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শ্রমিকরা বলেন, জুলাইয়ের বেতন না দিয়ে অবৈধভাবে কারখানাটি ১৯ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। অবিলম্বে জুলাইয়ের বেতন পরিশোধ ও কারখানা খুলে দেওয়া হোক।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কয়েক দিন ধরে কারখানাটি থেকে সুতাসহ বেশ কিছু কাঁচামাল অন্য যায়গায় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। এ কারণে শ্রমিকদের ভেতরে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কাজ করছিল। এর মধ্যেই গত ১১ আগস্ট শুধু  স্টাফদের বেতন দিয়ে কারখানাটি ১ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। শ্রমিকরা বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কারখানার সামনে পুলিশের মুখোমুখি হতে হয় শ্রমিকদের।'

তিনি আরও বলেন, 'এক পর্যায়ে শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আলতাব হোসেন এক নারী শ্রমিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এতে শ্রমিকরা উত্তেজিত হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে।'

শ্রমিক নেতা রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, 'কারখানাটি যে উপায়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তা পুরোপুরি অবৈধ। শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রেখে কারখানা লেঅফ ঘোষণা করার কোনো নিয়ম নেই।'

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পরিদর্শক আলতাফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কারখানা ২টি বন্ধ ঘোষণা করছে কর্তৃপক্ষ। সকালে প্রায় ৩০০ শ্রমিক কারখানার গেটে এসে বন্ধের নোটিশ দেখে চলে গেছে। কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।'

এক নারী শ্রমিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা সঠিক না।'

কারখানার মহাব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

কারখানাটির নিরাপত্তা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কারখানা আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যেই যত দ্রুত সম্ভব শ্রমিকদের জুলাই মাসের বেতন পরিশোধ করার চেষ্টা করবেন মালিক পক্ষ।'

 

Comments

The Daily Star  | English
changes in Bangladesh media industry

Allegiance shifts, so do faces at the helm

Bangladesh’s media industry has seen some major shake-ups, with more than two dozen outlets shuffling leadership positions following the July mass uprising last year.

18h ago