‘ক্যাম্পের জীবন বন্দী জীবন, দ্রুত স্বদেশে ফিরতে চাই’

উজরা জেয়া
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে মার্কিন প্রতিনিধি দল। ছবি: স্টার

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের কাছে দ্রুত নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের দাবি জানিয়েছে রোহিঙ্গারা।

আজ বুধবার কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যায় মার্কিন প্রতিনিধি দল। এর নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া।

তাদের সঙ্গে আলাপকালে রোহিঙ্গারা জানায়, ক্যাম্পে আশ্রিত জীবন অনেকটা বন্দী জীবন। এমন জীবন তারা চায় না। দ্রুত নিজ দেশ  মিয়ানমারে ফিরতে চায় তারা। 

এজন্য মিয়ানমারের ওপর জোর চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানায় রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়েরের নেতৃত্বে একদল রোহিঙ্গা উজরা জেয়ার কাছে একটি লিখিত আবেদন দেন। আবেদনে প্রত্যাবাসনের দাবি জানানো হয়।

এ সময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা রোহিঙ্গাদের কাছে ক্যাম্পের শিক্ষা ব্যবস্থা, খাদ্য ও নিরাপত্তা বিষয়েও আলাপ করেন।

প্রতিনিধি দলটি সকাল ৯টায় উড়োজাহাজে কক্সবাজার পৌঁছায়। সেখান থেকে সড়কপথে তারা উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যায়। 

সকাল ১১টার দিকে উখিয়ার বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউএনএইচসিআর পরিচালিত রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন সেন্টার পরিদর্শন করে মার্কিন দল।

পরে তারা পুষ্টি কেন্দ্র, ডব্লিউএফপি পরিচালিত খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। 

এরপর ১১ নম্বর ক্যাম্পে একটি কমিউনিটি সেন্টারে রোহিঙ্গাদের একটি দলের সঙ্গে তারা ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। 

১১ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসমাইল সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রতিনিধি দলটি ক্যাম্পের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। রোহিঙ্গারা জানিয়েছে ক্যাম্পে শিক্ষা ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে কম। অল্প লেখাপড়ার সুযোগ থাকলেও, উচ্চশিক্ষার সুযোগ নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত নয়।' 

ক্যাম্পের আরেক বাসিন্দা মো. ইউসুফ বলেন, 'প্রতিনিধি দল প্রত্যাবাসনের বিষয়ে রোহিঙ্গাদের মতামত জানতে চেয়েছে। রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের আশ্রিত জীবনকে বন্দী জীবন জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছে। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহলকে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের অনুরোধ জানানো হয়েছে।' 

মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, 'প্রতিনিধিদলকে খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়। খাদ্য সহায়তা যেন আগের মতো দেওয়া হয় এমন দাবিও জানানো হয়।'

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটসের  চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, 'প্রতিনিধি দলকে নিহত মুহিবুল্লাহর সংগঠনের পরিচয় দেওয়ার পর তারা কথা বলেন। তাদের যে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেখানে রোহিঙ্গাদের নানা দাবি-দাওয়া উল্লেখ রয়েছে। বিশেষ করে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।'

প্রতিনিধিদলে উজরা জেয়া ছাড়াও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু, ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও দক্ষিণ এশিয়ার শরণার্থী বিষয়ক সমন্বয়কারী ম্যাককেঞ্জি রোয়েসহ ১০ জন ছিলেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

9h ago