এবারের ঈদটা তাদের কাছে অন্য রকম
সাত কন্যা সন্তানের জনক মো. রমজান আলী। পরিবার চালান প্যাডেলচালিত রিকশায়। মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া পৌরসভার জয়পাশা কলোনিতে এক কক্ষে ৩৬ বছর কাটিয়েছেন।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, অভাবের সংসারে ৪ মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। নিজের ঘরবাড়ি না থাকায় কোনো মেয়ে তার স্বামীকে নিয়ে বাপের বাড়িতে আসেন নাই।
'খুব খারাপ লাগতো। কিন্তু কিছুই করার ছিল না,' দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রমজান আলী এ কথা বললেও, খানিক পরেই হাসি মুখে বলেন, 'কিন্তু আজ আমার সবচেয়ে বেশি আনন্দের দিন। যেখানে আমার কিছুই ছিল না, সেখানে আমার নিজের নামে জমি, সেই জমিতে নতুন ঘর হয়েছে।'
গত সোমবার তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের এই নতুন ঘরে উঠেছেন। আপ্লুত হয়ে বলেন, 'মনে হয় স্বপ্ন দেখছি।'
৭৫ বছর বয়সী বিধবা রেফা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জীবনে শেষ বয়সে এসে ভাবতেছি নিজের ঘরে ঈদ করতে পারমু। প্রতিবছর কেউর না কেউর (কারো না কারো) দুয়ারে গিয়া থাকতাম। এইবার আল্লায় মুখ তুলিয়া চাইছইন। এর মতো আনন্দের কিছু নাই।'
অন্যের জমিতে বা বাড়িতে থাকা মো. রমজান আলী ও রেফা বেগমের পরিবারের মতো ৩২টি পরিবারের মানুষগুলোর ঈদ হবে অন্যবারের তুলনায় আলাদা। নতুন বাড়িতে ঈদ উদযাপন করবেন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কাদীপুর ইউনিয়নের ঢুলিপাড়া এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা।
কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শিমুল আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গৃহ ও ভূমিহীন এসব মানুষজন এতই খুশি যে তা না দেখলে বুঝানো মুশকিল। আশা করি, প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারীদের জীবনযাপনে বেশ পরিবর্তন আসবে। এবারের ঈদটা তাদের কাছে অন্য রকম হবে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার মধ্যেই ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে গেছে।'
কুলাউড়া উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ভূমি ও গৃহহীন ছিন্নমূল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসছেন। এই উদ্যোগ এখন বিশ্বব্যাপী "অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল" হিসেবে সুপরিচিত ও প্রশংসিত।'
Comments