ঈদে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ২৭ লাখ যাত্রীর চাপ থাকবে: জাতীয় কমিটি

sadarghat launch terminal
স্টার ফাইল ছবি

পদ্মা সেতুর কারণে লঞ্চে করে বৃহত্তর বরিশালগামী যাত্রীর সংখ্যা কমে গেলেও, আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষের অস্বাভাবিক চাপের মুখে পড়বে ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল।

এছাড়া ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ নৌপথে উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় যাবেন।

নৌ পরিবহন, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতিদিন ৩ লাখ লোক হিসেবে ৯ দিনে গড়ে কমপক্ষে ২৭ লাখ লোক সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল দিয়ে বাড়ি যাবে।

মঙ্গলবার সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশিস কুমার দে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেন।

এদিকে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে এবং ঝামেলামুক্ত ও নিরাপদ ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করতে জাতীয় কমিটি সরকারকে বিকল্প উপায়ে জাহাজের সংখ্যা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি বছর ঈদুল ফিতরে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যায় প্রায় দেড় কোটি মানুষ।

এর মধ্যে ৩৭ দশমিক ৫০ লাখ (২৫ শতাংশ) নৌপথে যাতায়াত করে।

এতে বলা হয়, এর প্রায় শতভাগই উপকূলীয় জেলা বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের যাত্রী।

এদিকে নাগরিক সংগঠনটি জানায়, গত জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর চাঁদপুর বাদে উপকূলীয় জেলাগুলোর নৌপথে যাত্রীর হার প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে।

ফলে এই ঈদে লঞ্চে ৩০ লাখ মানুষ (মোট যাত্রীর ২০ শতাংশ) যাবেন এবং তাদের মধ্যে অন্তত ২৭ লাখ ঢাকা নদীবন্দর দিয়ে যাবেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৩ এপ্রিল থেকে গৃহমুখী মানুষের ভিড় শুরু হবে। বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলের নৌপথের সকল যাত্রী ১৩ থেকে ২১ এপ্রিল (ঈদের আগের দিন) ৯ দিনের মধ্যে বাড়ি ফিরবেন।

এর ফলে প্রতিদিন সদরঘাট টার্মিনাল দিয়ে ৩ লাখ মানুষ যাতায়াত করবে এবং বাকি যাত্রীরা নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর ব্যবহার করবে।

নাব্যতা সংকটের কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে সরকারিভাবে ৪১টি নৌপথ ছিল। তবে নাব্যতা সংকট ও যাত্রী সংকটের কারণে অন্তত ১৫টি নৌপথ ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত হয়েছে।

জাহাজের স্বল্পতার কথা উল্লেখ করে জাতীয় কমিটি বলেছে, বাকি ২৬টি নৌপথে নিয়মিত সর্বোচ্চ ৭০টি লঞ্চ চলাচল করে। ঈদের আগে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৮০-এর কাছাকাছি।

এর মধ্যে সদরঘাট থেকে ৯০টি নৌযান বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এবং ৯০টি বিভিন্ন স্থান থেকে আসবে।

নাগরিক সংগঠনটি আরও জানায়, প্রতিদিন ৯০টি লঞ্চে ৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করলে একটি লঞ্চ গড়ে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ যাত্রী বহন করবে।

কিন্তু লঞ্চগুলোর কোনোটিরই ধারণক্ষমতা দুই হাজারের বেশি নেই।

এমনকি অনেক লঞ্চের যাত্রী ধারণক্ষমতা ১ হাজারেরও কম। এছাড়া ঈদের আগের ৩ দিনে ভিড় বাড়বে দেড় গুণ।

এছাড়া প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অনেক লঞ্চ চাপ সামলানোর ক্ষমতার বাইরে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ যাত্রী বহন করে। এর ফলে ছাদে ও ডেকে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হয়।

সংগঠনটি নৌপথে দুর্ঘটনা ও জনদুর্ভোগের ঝুঁকি কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছে।

এছাড়া নৌপথ ও টার্মিনালগুলোতে সর্বোচ্চ নজরদারি এবং কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

1h ago