নরসিংদীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতাকে গুলির অভিযোগ
নরসিংদীর পলাশে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আগে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান (৩২)। বিএনপির অভিযোগ, পলাশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মো. রুবেল তাকে গুলি করেন।
আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে পলাশ উপজেলা কমপ্লেক্স সংলগ্ন দড়িহাওলাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ ছাত্রদল নেতা চরসিন্দুর ইউনিয়নের মালিতা গ্রামের শাজাহান সাজুর ছেলে। এ ঘটনায় ছাত্রদলের আরও ২ নেতা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, দুপুর আড়াইটার দিকে মো. রুবেলের নেতৃত্বে ১০-১২টি মোটরসাইকেলে ছাত্রলীগের ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী মোস্তাফিজুরের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান। এ সময় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। বাকবিতণ্ডার মধ্যে মোস্তাফিজুরসহ ৩ জনকে পেটান ছাত্রলীগের কর্মীরা। একপর্যায়ে রুবেল তার সঙ্গে থাকা পিস্তল বের করে মোস্তাফিজুর রহমানের ডান পায়ে গুলি করেন। তার চিৎকারে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেন। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মোস্তাফিজুরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মোস্তাফিজুরের ডান পায়ের হাঁটুর নিচে গুলি করে আহত করা হয়েছে। তাকে আমাদের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমি আর কিছু জানি না।'
এ ঘটনায় আহত পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। রুবেলের নেতৃত্বে পৌর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে। পরে, বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ভয় দেখাতে ও চাপে ফেলতে মোস্তাফিজুর রহমানকে গুলি করে তারা। আমাকেও পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।'
পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান অভিযোগ করেন, 'রুবেল ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র আল মুজাহিদ হোসেনের কথিত 'গানম্যান'।'
তবে, 'গানম্যানের' বিষয়টি অস্বীকার করেন ঘোড়াশাল পৌর মেয়র আল মুজাহিদ হোসেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুরের গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ শুনেছি। তবে, আমার গানম্যান রাখার কোনো পারমিশন নেই। আমার নামে বরাদ্দ বন্দুক নিজের কাছে রাখার লাইসেন্স আছে। রুবেল নামে আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আছে। হামলার বিষয়ে কোন রুবেলের কথা বলা হয়েছে তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়।'
পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রনি প্রধান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মো. রুবেল হোসেন পলাশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি। বর্তমানে তিনি কোনো পদে নেই।'
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মো. রুবেলের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমানের গুলিবিদ্ধ ও ২ জন আহত হওয়ার ঘটনা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। কিন্তু, বিস্তারিত জানতে পারিনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments