মৌসুমি কর্ম সংকট

কর্ম সংকট
লালমনিরহাট সদর উপজেলার সাকোয়া গ্রামে কাজের অপেক্ষায় দিনমজুররা। ২০ অক্টোবর ২০২২। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমার, গঙ্গাধর ও ধরলা নদীর অববাহিকায় প্রত্যন্ত গ্রামগুলোয় দিন মজুররা মৌসুমি কাজের সংকটে কঠিন সময় পার করছেন।

অক্টোবর-নভেম্বরে কর্ম সংকটকালে অতি দরিদ্র মানুষদের জন্য সরকারের ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পটি এখনো শুরু হয়নি।

অনেকে তাদের শ্রম স্থানীয় খামার মালিকদের কাছে কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার অনেকে মহাজনদের কাছ থেকে উচ্চসুদে টাকা ধার নিচ্ছেন।

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় ২৭ হাজার ২০০ দিনমজুরের জন্য ৪৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় ৮ হাজার ৩৬৮ শ্রমিকের জন্য ১৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

একই প্রকল্পের আওতায় ২ জেলার হতদরিদ্র পরিবারের দিনমজুরদের মৌসুমি কর্মসংকটের সময় অক্টোবর-নভেম্বর মাসে কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য এ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

প্রতিটি দিনমজুর এই প্রকল্পের আওতায় ৪০ দিন কাজের সুযোগ পাবেন। প্রতিদিন কাজের জন্য ৪০০ টাকা করে মজুরি পাবেন।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নভেম্বরের মাঝামাঝি আমন ধান কাটা শুরু না হওয়া পর্যন্ত কৃষি শ্রমিকদের চলমান কর্মসংকট অব্যাহত থাকতে পারে। এখন অনেক কৃষি দিনমজুর কাজের খোঁজে দেশের নানান এলাকায় যাচ্ছেন। অল্প সংখ্যক কৃষক আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু করেছেন।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তার অববাহিকার চর কালমাটি গ্রামের দিনমজুর বেলাল হোসেন (৪৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা কৃষিমাঠে দিনমজুরের কাজ করে প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরি পাই। এখন কাজ না থাকায় আমরা ৩৫০-৪০০ টাকায় অগ্রিম শ্রম বিক্রি করছি।'

তিনি আরও বলেন, 'ইতোমধ্যে আমার শ্রম স্থানীয় খামার মালিকের কাছে কম দামে বিক্রি করেছি। এই মৌসুমি কর্মসংকটের সময় হাতে কাজ নেই।'

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলার অববাহিকায় শিমুলবাড়ি গ্রামের দিনমজুর খাদিজা বেওয়া (৫০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বছর এই সময়ে সরকারের ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজের সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু, এ বছর প্রকল্পটি এখনো শুরু হয়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'গত বছর আমরা এই প্রকল্পের আওতায় ৪০ দিন কাজ পেয়েছিলাম। প্রতিদিন কাজের জন্য ৪০০ টাকা করে মজুরি দেওয়া হতো। এ বছর কবে কাজ শুরু হবে তা জানি না।'

'এ মাসের প্রথম দিকে কর্মহীন হয়ে পড়ি। প্রতিদিন বাড়ি থেকে বের হই। কিন্তু, কাজ পাই না,' বললেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা পোড়ার চর এলাকার দিনমজুর মেহের আলী (৫৩)।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (ডিআরআরও) আব্দুল হাই সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ পেয়েছি। ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হবে।'

'সুফলভোগী দিনমজুরদের তালিকা তৈরির কারণে বিলম্ব হচ্ছে' বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Cyber protection ordinance: Draft fails to shake off ghosts of the past

The newly approved draft Cyber Protection Ordinance retains many of the clauses of its predecessors that drew flak from across the world for stifling freedom of expression.

9h ago