সারে স্বয়ংসম্পূর্ণতা

১০ হাজার ৪৬০ কোটি টাকার প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে আরও ৫ হাজার ৪০ কোটি

পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা প্রকল্পটি নেওয়া হয় ৪ বছর আগে। এর জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১০ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। তবে, এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের ৪৮ শতাংশ বাড়তি ব্যয় হবে এবং শেষ হতেও সময় লাগবে আরও ২ বছর।

২০২৫ সালের মধ্যে ইউরিয়া সারে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি নেওয়া হয়। গত জুনে এর সময়সীমা শেষ হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই বরাদ্দের অর্ধেক অর্থ ব্যয় হয়েছে। তবে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) এখন আরও ২ বছর সময় এবং আরও ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাইছে।

সংশোধিত সময়সীমা ও ব্যয়ের প্রস্তাব আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হতে পারে।

প্রকল্পের নথি থেকে জানা যায়, ঋণ চুক্তিতে বিপত্তির কারণে নির্মাণ দেরি হয়। করোনা মহামারির কারণে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি আমদানিও ব্যাহত হয়েছে।

প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ২১ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে সরকারি তহবিল থেকে এবং বাকি ১০ হাজার ৯২০ কোটি টাকা বিডারদের অর্থসহ বৈদেশিক ঋণ থেকে দেওয়া হচ্ছে।

জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি), জাপানের ব্যাংক অব টোকিও-মিতসুবিশি লিমিটেড এবং হংকংয়ের এইচএসবিসি এই অর্থায়ন করছে।

রেল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন স্থাপনে ব্যয় বৃদ্ধি, ঋণ ব্যবস্থাপনা, বিমা ও নিবন্ধন ফি বৃদ্ধি, ট্রায়াল রানের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণের পাশাপাশি রাসায়নিক পণ্য, লুব্রিকেন্ট ও গ্যাস ক্রয়ের খরচ বৃদ্ধিকে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

ঘোড়াশালে বিদ্যমান ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড এবং নরসিংদীর পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড থেকে প্রতিদিন ২ হাজার ৮০০ টন সার উৎপাদনের জন্য সরকার প্রকল্পটি হাতে নেয়।

পুরনো কারখানা ২টির জায়গায় তৈরি নতুন কারখানা হবে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব।

বর্তমানে ২টি কারখানায় বছরে ৩ লাখ ১৫ হাজার টন সার উৎপাদিত হয়। নতুন কারখানার বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা হবে ৯ লাখ ২৪ হাজার টন।

দেশে ইউরিয়া সার উৎপাদন হয় ৭ লাখ টন থেকে ১০ লাখ টন। তবে, ইউরিয়ার বার্ষিক চাহিদা ২৫ লাখ থেকে ২৬ লাখ টন।

ফলে, প্রতি বছর প্রায় ১৩ থেকে ২০ লাখ টন ইউরিয়া সার আমদানি করতে হয়।

আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে সরকার এই প্রকল্প নিয়েছে।

এর উদ্দেশ্য ছিল, ইউরিয়ার বিপুল চাহিদার ঘাটতি মেটানো এবং কৃষকের জন্য যৌক্তিক দামে সার নিশ্চিত করা।

বিসিআইসি কর্মকর্তারা আশা করছেন, দানাদার সার কারখানা চালু হলে আমদানি ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে এবং ২০২৫ সাল থেকে দেশে ইউরিয়া সার আমদানি করতে হবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

3h ago