উদ্ধার করার সময় রহিমা বেগম বেশ খোশমেজাজে গল্প করছিলেন: পুলিশ

রাত ২টার দিকে রহিমা বেগমকে নিয়ে খুলনায় পৌঁছান পুলিশের একটি দল। ছবি: স্টার

নিখোঁজ রহিমা বেগমকে ফরিদপুরের সৈয়দপুর গ্রাম থেকে উদ্ধার করে খুলনায় নেওয়া হয়েছে। তাকে নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি বিশেষ দল রাত ২টার দিকে খুলনায় পৌঁছান।

এর আগে খুলনার দৌলতপুর থানা পুলিশের একটি দল শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলা থেকে উদ্ধার করে।

খুলনা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন দৌলতপুর থানায় রহিমা বেগমকে হাজির করেন এবং উদ্ধার অভিযান বিষয়ে কথা বলেন।

সাংবাদিকদের তিনি জানান, চলতি মাসের ১৭ তারিখে তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে যান এবং সেখানেই ছিলেন। এর আগে তিনি অন্য জায়গাও থেকেছেন এবং সঙ্গে তার ব্যবহৃত জামাকাপড় দেখান।

মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'আপাতত আমরা তাকে ভিকটিম সেন্টারে রাখবো, এবং পিআইবি চাইলে তাদের কাছে হস্তান্তর করব। রহিমা বেগম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। উনি আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন না। কথা বললে হয়তো আমরা জানতে পারতাম তিনি কীভাবে সেখানে গেলেন বা কী ঘটনা ঘটেছে। আরো জিজ্ঞাসা করে ঘটনার আদ্যপান্ত জানা যাবে।'

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২৮ বছর আগে খুলনার সোনালী জুট মিলে চাকরি করতেন কুদ্দুস মোল্লা। তখন তিনি পরিবার নিয়ে রহিমার বাসায় ভাড়া থাকতেন। ওই সময় রহিমার পরিবারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে কুদ্দুসের পরিবারের। কয়েক বছর আগে কুদ্দুস পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে আসেন। তাদের মধ্যে মাঝেমধ্যে যোগাযোগ হতো।

পুলিশ মূলত রহিমা বেগমের নিখোঁজ হওয়ার পূর্বের কল রেকর্ডের সূত্র ধরেই তদন্তে নামে। সেখান থেকেই জানতে পারে কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে তার অবস্থান। তবে এই সময় তিনি পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিশনাল ডেপুটি কমিশনার (এডিসি) নর্থ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, সাড়ে ১০টার দিকে আমরা অভিযান শুরু করি এবং শেষ করি সাড়ে ১১টার সময়। তাকে বোয়ালমারী থানার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।'

'কুদ্দুস মোল্লা কয়েক বছর আগে রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সেই সূত্র ধরেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। তারপর আমরা খুলনার পথে রওনা হয়ে রাত দুইটার দিকে খুলনার দৌলতপুর থানাতে পৌঁছাই,' তিনি যোগ করেন।

উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগমের বড় ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ আলী সাদি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ। আমরা খবর শোনার পর থেকে থানাতে অবস্থান করছি। মাকে নিয়ে পুলিশের একটি দল একটু আগে এসে পৌঁছেছেন খুলনায়।'

খুলনার দৌলতপুর থানাতে আনার পর মরিয়ম বেগমকে বেশ বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। হলুদ ওড়না দিয়ে তার মাথা ঢাকা ছিল।

পুলিশের উদ্ধারকারী দলের একাধিক সদস্য এই প্রতিবেদককে বলেছেন, যখন তাকে উদ্ধার করা হয় তিনি তখন বেশ খোশমেজাজে গল্প করছিলেন। পুলিশের পরিচয় পাওয়ার পর তিনি বেশ বিমর্ষ হয়ে যান। সারা পথে তিনি প্রায় কোনো কথাই বলেননি। ছোটখাটো প্রশ্নেরও উত্তর তিনি দিচ্ছিলেন না।

Comments

The Daily Star  | English

No fitness, no route permit

The bus that killed 6 had no valid documents

15m ago