৫ বছর ধরে চলছে ৪৫০ মিটার নদীতীর রক্ষার কাজ

সময়মতো ধরলার তীররক্ষার কাজ শেষ না হওয়ায় ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে আরও অনেক পরিবার ও প্রতিষ্ঠান। ছবি: স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বাদাইটারী গ্রামে ধরলা নদীর ৪৫০ মিটার তীররক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। গত ৫ বছরে এর মাত্র ১০০ মিটারের কাজ শেষ হয়েছে।

সময়মতো তীররক্ষার কাজটি শেষ না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ। নদীভাঙনে হারাতে হচ্ছে বসতভিটা ও আবাদি জমি। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে আরও অনেক পরিবার ও প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু প্রকল্পের অবশিষ্ট ৩৫০ মিটার তীররক্ষার কাজ কবে শেষ হবে- তা বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কেউই।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায় জানায়, ২০১১-২০১২ অর্থবছরে মোগলহাটে ধরলা নদীর তীররক্ষার ৭ কোটি ৮১ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি পাস হয়। কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে। এরপর কাজটি করার জন্য চুক্তি হয় 'খুলনা শিপইয়ার্ড' নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। এই ধারাবাকিতায় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে 'ডলি কনস্ট্রাকশন' নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে।

এরপর অল্প কিছু সিসি (সিমেন্ট কংক্রিট) ব্লক তৈরি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ ফেলে রাখলে মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান 'খুলনা শিপইয়ার্ড' 'হাসিনা-আলম' আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজটি করতে দেয়। পরে নতুন এই প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করলেও তা চলছে কচ্ছপ-গতিতে।

ভাঙনের শিকার বাদাইটারী গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের ভাষ্য, প্রকল্পের কাজটি ঠিক সময়ে শেষ হলে তাকে বসতভিটা ও আবাদি জমি হারাতে হতো না। তার মতোই গ্রামের অন্তত ৫০টি পরিবার নদীভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছে।

রফিকুল ইসলাম বলেন, 'আমি এখন নিঃস্ব। অন্যের জমিতে ঘর তুলে থাকছি। ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার মাশুল দিতে হচ্ছে আমাদের।'

একই গ্রামের আব্দুস সামাদ আক্ষেপ করে বলেন, 'অনেক আন্দোলন ও আবেদন করে প্রকল্পটি পাস করা হয়েছিল। কিন্তু এর সুফল আমরা পেলাম না।'

এ ব্যাপারে মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের বক্তব্য, প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ কবে শেষ হবে তা কেউ বলতে পারছে না। কোনো অগ্রগতিও নেই।

দ্য ডেইলি স্টারকে এই জনপ্রতিনিধি বলেন, 'চলতি বছরেই প্রকল্পের কাজটি শেষ করা না গেলে আরও অনেক পরিবারকে সর্বস্ব হারাতে হবে। ভাঙনের হুমকিতে আছে মসজিদসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও। কিন্তু এখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কারুর দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।'

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় লালমনিরহাট পানি লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তার ভাষ্য, বর্ষার কারণে আপাতত কাজটি বন্ধ আছে। বর্ষা শেষে কাজটি আবার শুরু করে তা অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।

নির্ধারিত সময়ের এতদিন পরেও প্রকল্পের কাজ শেষ না করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, 'কাজটির কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তা আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। প্রয়োজনে তারাই ব্যবস্থা নেবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Govt plans to include private sector in US tariff talks

Bangladesh is currently reviewing the proposals and will send a response within the next couple of days, Commerce Secretary Mahbubur Rahman told The Daily Star yesterday over the phone.

15h ago