নাটোরে ফসলি জমি রক্ষায় জনস্বার্থ মামলা
নাটোরের লালপুরে অবৈধভাবে ৩ ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি এবং ট্রাক্টরে করে এই মাটি পরিবহনের ক্ষেত্রে সড়ক-মহাসড়কের ক্ষতিসাধনের ঘটনায় জনস্বার্থে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন মো. ওমর ফারুক নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।
এর পাশাপাশি মাটি খননের ভিডিও চিত্র ধারণ ও ছবি তোলার কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগও এনেছেন তিনি।
গতকাল বুধবার লালপুর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আমলি আদালতের স্টেনোগ্রাফার (শাটলিপিকার) মহুয়া আফরোজ জানান, মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের জ্যেষ্ঠ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীন বিষয়টি তদন্ত করে পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুসারে আজ বৃহস্পতিবার নাটোর পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. শরিফ উদ্দিন পরিদর্শক মো. নাসিরুল ইসলামকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
মামলার আবেদনে ওমর ফারুক উল্লেখ করেন, গত ২৯ মে সকাল ১১টার দিকে লালপুর থানার নান্দরায়পুর এলাকার হজরত আলীর ফসলি জমিতে পুকুর খননের ভিডিও ধারণ ও ছবি তোলার সময় হজরত আলীসহ মো. নাজিম এবং মো. মিনাল তাকে হুমকি দেন। ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত হজরত আলীর জমিতে পুকুর খননের কাজ বন্ধ করে দেন।
এতে আসামিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পরের দিন ৩০ মে সকালে ফারুকের বাসায় আসেন। সেখানে তাকে না পেয়ে তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাকে উঠিয়ে নেওয়ার হুমকির পাশাপাশি হত্যার হুমকিও দেন বলে মামলার আবেদনে জানান ফারুক। এরপর ৪ জুন সকালে ফারুকের মুদির দোকানে এসে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সেইসঙ্গে ফারুক উল্লেখ করেন, আসামিরা চাষের জমি থেকে মাটি কেটে তা অবৈধ ইটভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আসছেন। আর খনন করা মাটি বহনের কাজে যে ট্রাক্টর ব্যবহার করা হচ্ছে তার চাকার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার সড়ক-মহাসড়ক। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নাটোর জেলা শাখার সভাপতি সোহেল রানারে ভাষ্য, 'যত্রতত্র পুকুর খননের ফলে নাটোর জেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর আবাদি জমি কমে গেছে। তাই মাটিখেকোদের হাত থেকে আবাদি জমি রক্ষায় জনস্বার্থে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।'
Comments