পাবনা

দুধের দাম ৫ টাকা বাড়লেও খামারিরা পাচ্ছেন ৩ টাকা

ছবি: স্টার

বাজারে সব ধরনের দুধের দাম বেড়েছে। দুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোও ইতোমধ্যে লিটারে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে তরল দুধের দাম। তবে, খামারি পর্যায়ে ৫ টাকা বাড়ানোর কথা বলা হলেও ৩ টাকা করে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দুধ উৎপাদনকারীরা। 

এ ছাড়া গো-খাদ্যসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এতে দুধের দাম বাড়লেও লাভ থাকছে না বলে দাবি কৃষকদের।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে আড়ং, আকিজ ও প্রাণসহ অধিকাংশ কোম্পানির প্যাকেটজাত তরল দুধ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ৯০ টাকা দরে।

খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খামার পরিচালনা ব্যয় বেড়েছে। এ ছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ের অধিকাংশ খামারি ব্যবসায়ী ও সমিতির নেতাদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে রাখায় তারা কোম্পানি নির্ধারিত দামের চেয়েও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

ছবি: স্টার

পাবনা জেলা দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার-ফরিদপুর গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মিল্কভিটা প্রতি লিটার দুধের দাম ৫ টাকা বাড়িয়েছে। ফ্যাটের লেভেল ৪ থাকলে বর্তমানে প্রতি লিটার দুধের দাম দিচ্ছে ৪৬ টাকা। গত মাসে দেওয়া হতো ৪১ টাকা লিটার করে। লিটারে ৫ টাকা বাড়ানো হলেও এর আগে লিটার প্রতি এক টাকা বোনাস ও খরচ বাবদ আরও এক টাকা দেওয়া হতো এখন সেটা দেওয়া হচ্ছে না।' 

'আগে ৪১ টাকা লিটার দুধ বিক্রি করে পাওয়া যেত ৪৩ টাকা। এখন এক লিটার দুধের দাম ৪৬ টাকা দেওয়া হলেও অতিরিক্ত ২ টাকার সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে দুধের দাম লিটারে ৫ টাকা বাড়ানোর কথা বলা হলেও মূলত বেড়েছে ৩ টাকা', বলেন সাইফুল ইসলাম।

প্রান্তিক খামারিদের দাবি, তারা নির্ধারিত মূল্যে দুধ বিক্রি করতে পারছেন না। দাদন নিয়ে রাখায় তারা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দামে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

পার-ফরিদপুর গ্রামের প্রান্তিক খামারি মো. আবু সাইদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মিল্কভিটায় দুধ সরবরাহ করলেও নিজস্ব কোড না থাকায় সমিতির নেতাদের মাধ্যেমে দুধ সরবরাহ করতে হচ্ছে। খামার পরিচালনার জন্য এর আগে সমিতির নেতাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাদন নিয়েছি। ফলে সমিতির নেতাদের কাছে ৪৪ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে।'

আবু সাইদ জানান, তার মতো একই অবস্থা ওই এলাকার অধিকাংশ প্রান্তিক খামারির। খামার পরিচালনা ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দাদন নিয়ে কম দামে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না।

এদিকে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামার পরিচালনা খরচ কয়েকগুণ বেড়েছে। এতে দুধের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা খামারিদের। 

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রামখারুয়া গ্রামের খামারি রাজু আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বস্তা খাদ্যের দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে এক বস্তা গো-খাদ্যের দাম ১৫০০ থেকে ২৮০০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে।'

এভাবে গো-খাদ্যের দাম বাড়তে থাকলে গবাদি পশু পালন হুমকির মুখে পড়বে বলে জানান তিনি। 

পাবনা জেলা ডেইরি খামারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, 'বর্তমানে তার খামারে সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার গো-খাদ্য প্রয়োজন হচ্ছে। অথচ দুধ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকার। 
দুধ বিক্রি করে গো-খাদ্যের খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।' এ অবস্থা চলতে থাকলে খামার পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা তার। 
 

Comments

The Daily Star  | English

Jatrabari turns into battlefield as students clash

Students of three colleges clashed at Dhaka's Jatrabari today, turning the area into a battlefield

1h ago