প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ‘আস্থা’ রেখে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত চা-শ্রমিক ইউনিয়নের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি 'আস্থা' রেখে তার 'আশ্বাসেই' ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আপাতত ১২০ টাকা মজুরিতে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন।

গতকাল রোববার গভীর রাতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, সহসভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরাসহ আরও অনেকে।

রাত ৯টায় শুরু হওয়া এই বৈঠক শেষ হয় ভোররাত ৩টার দিকে।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তার সম্মানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে সোমবার কাজে যোগ দেবে। আপাতত চলমান মজুরি ১২০ টাকা হারেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন। চা-শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিগুলো লিখিত আকারে জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিল করা হবে। জেলা প্রশাসক দাবিসমূহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করবেন এবং বাগান মালিকরা চা-বাগানের প্রচলিত প্রথা অনুসারে ধর্মঘটকালীন মজুরি শ্রমিকদের পরিশোধ করবেন।

এতে আরও বলা হয়, শ্রমিকরা দুর্গাপূজার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলবেন, যা আয়োজনের উদ্যোগ নেবে জেলা প্রশাসন।

প্রশাসনের পক্ষে বিবৃতিতে সই করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া ও বিভাগীয় শ্রম দপ্তর শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম।

এ ছাড়া চা-শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে স্বাক্ষরকারীরা হলেন ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, সহসভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী, প্রমুখ।

দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ অগাস্ট থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন দেশের ২৪১টি চা বাগানের প্রায় সোয়া লাখ শ্রমিক। প্রথম ৪ দিন শ্রমিকরা প্রতিদিন ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা।

১১ দিন পর গত ২০ অগাস্ট শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠকে দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকায় রাজি হয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। কিন্তু আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে রোববার আবার রাজপথে নামে।

এই প্রেক্ষাপটে রোববার রাতেই আবার চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন।

এদিকে আজ সকালে কুলাউড়ার কালিটি চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার বেশিরভাগ শ্রমিক রাতের সিদ্ধান্তের কথা জানেন না। তারা অন্য দিনের মতো বাগানের কাজ বন্ধ রেখেছেন। সড়ক অবরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রঞ্জিতা তাঁতী নামের এক নারী চা-শ্রমিক বলেন, 'দালালেরা প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে আন্দোলন বন্ধ করতে চায়। আজও আমরা আন্দোলনে যাব।'

কালিটি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম গোয়ালা বলেন, 'কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের কথা আমরা এখনো জানি না। তাই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English

JnU protests called off

Students and teachers of Jagannath University called off their protest last night after receiving assurances from the government that their demands would be met.

1h ago