৪৫ মিনিট যানজটে আটকে ডিআইজি, তাৎক্ষণিক ওসি প্রত্যাহার

ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ৪৫ মিনিট যানজটে আটকে থাকার পর 'দায়িত্বে অবহেলা'র অভিযোগে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে সংযুক্ত করেছেন ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন।

আজ শনিবার সকালে সড়কপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছিলেন ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন। সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে পৌঁছালে মুরাদনগর থানার কোম্পানীগঞ্জ বাজারে দীর্ঘ যানজটে পড়েন তিনি। 

সেসময় সেখানে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম কিংবা পুলিশের কোনো সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। পরে দুপুরেই ওসিকে মুরাদনগর থেকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ওসি আবুল হাসিমকে প্রত্যাহারের চিঠিটির একটি কপি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে পৌঁছেছে। 

পুলিশ সুপার নেছার উদ্দীন আহমেদ (অপারেশন, ডিসিপ্লিন ও প্রসিকিউশন) স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ওসি আবুল হাসিমকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে সংযুক্ত করা হলো। নির্দেশিত কর্মস্থল রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে শনিবার দুপুর ২টার মধ্যে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

তবে প্রত্যাহারের ওই আদেশে ডিআইজির যানজটে আটকে থাকার কোনো বিষয় উল্লেখ করা হয়নি।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি যানজটে পড়েছি সে কারণে নয়, ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে কারণ তিনি দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। মুরাদপুর কোম্পানিগঞ্জ এলাকায় আমি প্রায় ৪৫ মিনিট যানজটে আটকা পড়ি। আমি খবর নিয়ে জানতে পারি যে, প্রতিদিনই এই সড়কে এমন যানজট লেগে থাকে। আমার গাড়ি বাসের শ্রমিকরা অন্য পথ দিয়ে ঘুরিয়ে পার করে দিয়েছে। কিন্তু অন্য জনসাধারণের গাড়ি কীভাবে পার হবে? এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ে।' 

'এরকম স্কুল আওয়ার-অফিস আওয়ারে যদি সড়কে এমন যানজট থাকে, হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ যেই থাকুক এখানে থানার একটা দায়িত্ব আছে। যেসময়টায় যানজট থাকে সেসময় এখানে দুজন পুলিশ থাকবে যারা যানজটটা নিয়ন্ত্রণ করবে, গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু আমি কোনো পুলিশ সদস্য সেখানে দেখিনি। জনসাধারণের প্রতি দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি আমার নজরে আসায় এবং ওসির দায়িত্ব ঠিকমতো পালন না করায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি করা হয়েছে।'

'তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলবে। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পুলিশ না থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ (এসপি, অতিরিক্ত এসপি) দায় এড়াতে পারেন না। এ বিষয়ে তদন্ত হবে,' বলেন তিনি।

জানতে চাইলে জেলা গোয়েন্দা কর্মকর্তা মো. মুনিরুল ইসলাম বলেন, 'ডিআইজি স্যারের সঙ্গে জেলা পুলিশের প্রটোকল ছিল। কোম্পানিগঞ্জ মহাসড়কে রাস্তার কাজ চলছে। তাই সেখানে যানজট বেশি। তিনি আটকা পড়েছেন খবর পেয়ে ওসি আবুল হাসেম সেখানে গিয়েছিলেন।' 

যোগাযোগ করলে কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডিআইজি স্যার যে এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করবেন সেটি সব চ্যানেলেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবু সড়কে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা ছিল না।'

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে ওসি আবুল হাসিম বলেন, 'ডিআইজি স্যার ওই সড়কপথে সকাল বেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবেন এমন কোনো তথ্য আমার কাছে ছিল না।'

চিঠি পাওয়ার পর ইতোমধ্যেই তিনি মুরাদনগর থানা ছেড়ে চট্টগ্রামে পৌঁছেছেন বলে জানান তিনি। 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

37m ago