বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের দেশে আনতে যা করার অবশ্যই করব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মোমেন
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: সংগৃহীত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, 'বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের ঘাতকদের দেশে এনে বিচারের রায় কার্যকর করতে যা যা করার, আমি যতদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছি সে প্রচেষ্টা অবশ্যই চালিয়ে যাব।'

আজ সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২২ উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।

'বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে ৩ বছর সরকারে ছিলেন' উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'এই সাড়ে ৩ বছরে জাতিকে একটি শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে যা যা দরকার সব তিনি করে গেছেন। আর আমাদের দিকনির্দেশনাও দিয়ে গেছেন।'

'জাতির ভিত্তি রচনার জন্য দরকার একটা শাসনতন্ত্র। বঙ্গবন্ধু মাত্র ৯ মাসের মধ্যে একটি শাসনতন্ত্র দিয়ে গেছেন। অথচ পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র তৈরি করতে লেগেছে ৯ বছর। আর আমেরিকার লেগেছে ১৩ বছর,' বলেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর কার্যকর নেতৃত্বের জন্যেই মাত্র ২ মাসের মাথায় আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের সৈন্য ফিরে গেছে। বঙ্গবন্ধুর কারণেই সাড়ে ৩ বছরেই আমরা ১২৬টি দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ এমনকি জাতিসংঘের সদস্যপদ অর্জন করি। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণে।'

স্মরণসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, 'পোয়েট অব পলিটিক্স খ্যাত বঙ্গবন্ধু শুধু এ দেশের নয়, তিনি ছিলেন সমগ্র বিশ্বের নেতা, দেশে দেশে নিপীড়িত জনতার সংগ্রামী চেতনার এক জীবন্ত কিংবদন্তি। আর তাই, বঙ্গবন্ধুকে হারানোর বেদনা শুধু এ দেশ নয়, সারা বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে ধ্বনিত হয়, বিশ্বের নেতৃবৃন্দও শোকার্ত হন।'

বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের একটি ফাউন্ডেশন আছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিল তাদেরও বিচারের আওতায় আনার জন্য বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে।'

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিতে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু "নন-অ্যালাইন্ড ফরেন পলিসি" গ্রহণ করেন। এটা যে আমাদের জন্যে কত মঙ্গলজনক, আমরা আজও তার ফরেন পলিসি নিয়ে চলছি।'

'বঙ্গবন্ধু বলেছেন, পিস ইজ ইম্পারেটিভ ফর ডেভেলপমেন্ট। তিনি সবসময় শান্তির জয়গান গেয়েছেন। আমরা শান্তি চাই। শান্তি উন্নয়নের একটি বড় সহায়ক। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধুর এই শান্তির প্রচেষ্টার ওপর জোর দিতে চাই,' যোগ করেন তিনি।

বিশ্বব্যাপী সংঘাত, যুদ্ধ কমাতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ করার সুযোগ আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,  'বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আমাদের দেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটা উন্নত, সমৃদ্ধশালী, স্থিতিশীল, অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতি হবে, যেখানে অন্ন, বস্ত্র বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সবার জন্য যেন নিশ্চিত হয়, সে প্রচেষ্টাই শেখ হাসিনা চালিয়ে যাচ্ছেন।'

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শেখ পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য শেখ কবির হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

Comments

The Daily Star  | English

1,500 dead, nearly 20,000 injured in July uprising: Yunus

He announced plans to demand the extradition of deposed dictator Sheikh Hasina from India

1h ago