ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২

উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মারার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যাত্রাপুর নুরানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা হচ্ছে। ছবি: স্টার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে প্রকাশ্যে 'নৌকা' প্রতীকে সিল মারার অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা। তার অভিযোগ, আশুগঞ্জের সাতটি কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল মেরেছেন।

জিয়াউল হক মৃধা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাকে হারাতে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে। ভোটার তালিকায় গড়মিল ছিল। আমার সমর্থক ভোটারদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আশুগঞ্জের সাতটি কেন্দ্রে নৌকার সমর্থকরা প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল মেরেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমার নিজ উপজেলা সরাইলের সবকয়টি ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রে হালনাগাদ ভোটার তালিকা সরবরাহ করা হয়নি। কারচুপির করতে এমন করেছে প্রশাসন।'

ওই সাত কেন্দ্রের ভোট বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, 'রিটার্নিং কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।'

জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন থেকে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, সেই তালিকা আমরা ভোটের সরঞ্জামের সঙ্গে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'

আজ দুপুর দেড়টার দিকে আশুগঞ্জের যাত্রাপুর নুরানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও বড়তল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বুথে ঢুকে অপ্রাপ্ত বয়স্করা ব্যালটে সিল মারছেন। ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের বাধা দেননি। এই সুযোগে বহিরাগতরা প্রকাশ্যে ব্যালটে 'নৌকা' প্রতীকে সিল মারেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যাত্রাপুর নুরানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল মারা হচ্ছে। ছবি: স্টার

ব্যালটে সিল মারার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে ব্যালতে সিল মারার অভিযোগ সত্য নয়, ভিত্তিহীন।'

আশুগঞ্জ উপজেলার রওশন আরা জলিল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ভোট না দিয়েই ফিরে যাচ্ছিলেন মমতা বেগম। জানতে চাইলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার স্লিপ দেওয়া হতো। এবার এমন করা হয়নি। এ কারণে তিনি ভোট দিতে পারেননি।

তিনি বলেন, 'যারা নামের তালিকা নিয়ে বাইরে বসে আছেন, তারাও নাম বের করে দিতে পারছেন না। ভেতরে গেলে বলা হচ্ছে ভোটার নম্বর নিয়ে আসতে।'

নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিটি কেন্দ্রেই কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। কোথাও কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হয়েছে।'

সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে পাঁচ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

গত ৩০ সেপ্টেম্বর এই আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়ার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

Comments

The Daily Star  | English
Religious leaders meet Prof Yunus

Leaders from religious groups in meeting with Prof Yunus

The meeting between the chief adviser and the religious groups was scheduled to start around 4:00pm

1h ago