গাইবান্ধায় এজেন্টকে হুমকি, জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ

'এখানকার এজেন্টরা অভিযোগ করছেন, তাদের ভয়-ভীতি দেখানো ও হুমকি দিয়ে বের করে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাইরে থেকে ব্যালট এনে বাক্সে ফেলা হচ্ছে।’
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দশলাল দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের বাইরে মানুষের ভিড়। ছবি: স্টার

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দশলাল দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এজেন্টকে হুমকি দেওয়া, কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া এবং বাইরে থেকে সিল মারা ব্যালট এনে বাক্সে ফেলার অভিযোগ তুলেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল লতিফ প্রধান।

লতিফ জানান, ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রে ভোটারদের সারি না থাকলেও বাইরে অনেক মানুষের ভিড় দেখা যায়।

ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কোনো বুথে এজেন্ট নেই। কোনো কোনো বুথে একসঙ্গে দুই জন গিয়ে ভোট দিচ্ছেন। আশেপাশের কেন্দ্রগুলোর চেয়ে এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে অনেক বেশি। দশলাল দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে মোট বুথের সংখ্যা ১১টি। ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ৭০৫ জন।

এদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২৬৭টি। সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১ নম্বর বুথে পড়েছে ১১৫টি ভোট।

এই বুথের একজন পোলিং অফিসার পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, এই কেন্দ্রে একজন একাধিক ভোট দিচ্ছেন। বাইরে থেকে আনারস প্রতীকের পক্ষের লোকজন কেন্দ্রে এসে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে—সেই অভিযোগ সত্যি বলেও তিনি স্বীকার করেন।

পাশের কেন্দ্র রাজাবিরাট উচ্চ বিদ্যালয়ে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ১০ শতাংশ।

দশলাল দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের ৩ নম্বর বুথে রয়েছেন মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মো. আব্দুল লতিফ প্রধানের এজেন্ট সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'আমার বুথে আমাকে ভয়-ভীতি দেখিয়েছে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. শাকিল আকন্দ বুলবুলের পক্ষে বাইরে থেকে আসা কিছু লোক। সেই সঙ্গে এই বুথে ১৫টি ব্যালট বাইরে থেকে সিল মেরে ঢোকানো হয়েছে।

একই অভিযোগ করেন ৪ নম্বর বুথের মোটরসাইকেল প্রার্থীর এজেন্ট সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, 'আমার বুথে আনারস প্রতীকে একাধিক ভোট দিচ্ছে কিন্তু অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না।

খবর পেয়ে কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল লতিফ।

অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোকারম হোসেন বলেন, 'এখানে বাইরে একটি গণ্ডগোল হয়েছিল। ভেতরে কিছু এজেন্ট এসে অভিযোগ দিয়েছে। আমি বুথে গিয়ে তাদের অভিযোগ শুনেছি।'

জাল ভোটের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানকার এজেন্টরা অভিযোগ করছেন, তাদের ভয়-ভীতি দেখানো ও হুমকি দিয়ে বের করে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাইরে থেকে ব্যালট এনে বাক্সে ফেলা হচ্ছে।'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এই প্রার্থী বলেন আমি নির্বাচন কমিশনে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছি।

জানতে চাইলে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি উভয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছ থেকে অভিযোগ পাচ্ছি। এর মধ্যে অনেকগুলো অভিযোগ পেয়েছি এবং সঙ্গে সঙ্গে বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে।'

Comments