‘তৃতীয় লিঙ্গের পরিচয়ে ভোট দিলাম, এটা আমার কাছে গর্বের’

আনোয়ারা ইসলাম রানী। ছবি: স্টার

'প্রথমবার নিজ পরিচয় তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হিসেবে ভোট দিলাম। এটা আমার কাছে সত্যিই গর্বের', বলে মন্তব্য করেন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটার আনোয়ারা ইসলাম রানী (৩০)।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে তিনি রংপুরের নূরপুর এলাকায় নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন।

ভোট দেওয়ার পর রানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এর আগে আমি ২ বার জাতীয় ও ২ বার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। তবে এবারই প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার পরিচয়ে ভোট দিলাম।'

রানী জানান, ভোটার হয়ে শুধু ভোট দেওয়া নয়, সামনে নির্বাচনে অংশগ্রহণেরও স্বপ্ন দেখছেন তিনি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনাও রয়েছে তার। 

জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে তার মতো মানুষদের মূলধারায় চালিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেবেন বলেনও জানা তিনি।

রংপুর সিটি করপোরেশনের একমাত্র তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রানীর বাড়ি রংপুর সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নূরপুর এলাকা। তিনি নূরপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তার সঙ্গে নুসরাত বেগম, সুবর্ণা রানীসহ বেশ কয়েকজন তৃতী লিঙ্গের মানুষের বসবাস। রানী দশম শ্রেণি পযর্ন্ত পড়াশুনা করেছেন।

জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ জন ভোটারের মধ্যে রানী একমাত্র তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার। তবে রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় আরও ৯৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ থাকলেও তারা তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। তারা পুরুষ ও নারী ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত।
 
রানী জানান, স্কুল জীবন থেকে শুরু করে এখন পযর্ন্ত তাকে লড়াই-সংগ্রাম করতে হচ্ছে। এখনো সমাজের বঞ্চনা নিয়ে বাঁচতে হচ্ছে। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীর কাছ থেকে শুধু বঞ্চনাই পাচ্ছেন। সব বাধা, বঞ্চনা আর তিরস্কার উপেক্ষা করে এগিয়ে চলেছেন। একদিন তার স্বপ্ন পূরণ হবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

রানী বলেন, 'অতীতে আমাদের অধিকার নিয়ে কেউ ভাবেননি। কেউ আমাদের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার চিন্তাও করেননি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের কথা ভেবেছেন এবং আমাদের অধিকার দিয়েছেন। আমরা এখন নিজেকে মানুষ ভাবতে পারছি।'

 

Comments

The Daily Star  | English

UK govt unveils 'tighter' immigration plans

People will have to live in the UK for 10 years before qualifying for settlement and citizenship

1h ago