নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিতে ‘অতিষ্ঠ’ শিবির ক্যাডার নাছির
নাছিরের নাম ভাঙিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে একটি চক্র চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম পুলিশের এক সময়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী নাছির উদ্দিন চৌধুরী ওরফে 'শিবির নাছির'।
আজ বুধবার রাতে নগরীর চকবাজার এলাকায় নিজের নতুন অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই অভিযোগ করেন।
র্যাব-পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী নাছির একসময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় 'শিবির নাছির' নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
নাছির উদ্দিন চৌধুরী ওরফে 'শিবির নাছিরের' বিরুদ্ধে জোড়া খুন, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও অস্ত্র আইনের মামলা ছিল ৩৬টি। একে একে খালাস পেয়েছেন ৩১টি মামলায়। দুটিতে সাজা হলেও আগে কারাভোগে শেষ হয়ে যায়। আছে আর তিনটি মামলা।
তিনটি মামলায় জামিন নিয়ে দীর্ঘ ২৬ বছর পর গত বছরের ১১ আগস্ট কারাগার থেকে বের হন নাছির।
জামিনে বের হয়ে তিনি চকবাজার এলাকায় এনসি ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হয়েছেন।
কারা সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালের ৯ এপ্রিল থেকে কারাগারে ছিলেন নাছির। দীর্ঘ ২৬ বছর পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ফটিকছড়িতে তিনটি হত্যা মামলা বিচারাধীন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, তার নাম ভাঙিয়ে কে বা কারা চট্টগ্রাম ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার লোকদের ফোন দিয়ে চাঁদা দাবি করছে। চাঁদাবাজির এই ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে দুই মাস আগে নগরীর চকবাজার থানায় নিজে সাধারণ ডায়রিও করেছেন। কিন্তু পুলিশ কাউকেই চিহ্নিত করতে পারেনি।
নাছির বলেন, 'একটি পক্ষ যারা চাঁদাবাজ এবং সুবিধাবাদী, তারা রাজনৈতিক দলের কেউ নয়, আমার কর্মী বা সমর্থক কেউ নয়, তারা এ কাজগুলো করছে। আমি নিজে পুলিশকে ঘটনা শোনার পর তদন্ত করতে বলেছি। নিজে দুটি ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দেখেছি মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও খাগড়াছড়ি থেকে ফোন দিয়ে আমার নামে চাঁদা তোলা হচ্ছে।'
'আমি তো পুলিশ না। আমি আইন মেনে চলতে চাই। আমি পাবলিকের সাহায্য চাই। কেউ আমার নামে চাঁদা চাইলে আপনারা আমাকে জানাবেন, পুলিশে অভিযোগ করবেন,' বলেন তিনি।
আদালত সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর নাছিরের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রাবাসে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় রায় হয়। এতে নাছিরের ৫ বছর কারাদণ্ড সাজা হয়েছিল।
এর আগে, ২০০৮ সালে অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়। ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দিন হত্যা মামলায় খালাস পান নাছির। ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর জমিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরি ও হাটহাজারীর তিন খুনের মামলায় খালাস পান নাছির। ২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রামের জামাল খান রোডে অধ্যক্ষ মুহুরির বাসায় ঢুকে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করে। এভাবে ৩১টি মামলায় খালাস পান নাছির।
নাছির হাটহাজারীর মন্দাকিনী এলাকার এলাহী বক্সের ছেলে। ১৯৮২ সাল থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়তে থাকেন তিনি।
Comments