পিস্তল উঁচিয়ে প্রতিবেশীকে হুমকির অভিযোগে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকিরের বিরুদ্ধে জিডি
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় জমি নিয়ে বিবাদের জেরে সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে পিস্তল উঁচিয়ে প্রতিবেশীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় আনোয়ার হোসেন (৫৫) রৌমারী থানায় জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লা হিল জামান দ্য ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'ঘটনাটি গতকাল দুপুরের। আজ জিডি নথিভুক্ত করা হয়েছে।'
আনোয়ার উপজেলার রৌমারী গ্রামের বাসিন্দা। সাধারণ ডায়েরিতে আনোয়ার উল্লেখ করেছেন, জাকির হোসেন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তার পৈত্রিক জমির ৪৫ শতাংশ আগেই দখল করে নিয়েছেন। রোববার দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে অবশিষ্ট জমিতে মাটি ফেলে দখল করার চেষ্টা করেন। এই তথ্য পেয়ে আনোয়ার ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাধা দিলে জাকির ক্ষিপ্ত হন। সে সময় জাকির, তার স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা ও ছেলে সাফায়াত আদি জাকির আনোয়ারকে শাসান ও মারধর করতে উদ্যত হন। একপর্যায়ে জাকির হোসেন পিস্তল উঁচিয়ে আনোয়ার হোসেনকে গুলি করার হুমকি দেন।
জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, 'বিবাদীরা (জাকির হোসেন, তার স্ত্রী ও ছেলে) আনোয়ার ও তার পরিবারের সদস্যদের রাস্তায় একা পেলে মারধরের হুমকি দেন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির ভয় দেখান।'
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জাকির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জমিটি অর্পিত সম্পত্তি ছিল, আমি আদালতের রায়ে পেয়েছি। আইনগতভাবে অবমুক্ত হওয়ার পর এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে সীমানা নির্ধারণ করে আমি দখল নিয়েছি।'
তিনি বলেন, 'জমির দুই পাশে জনগণের চলাচলের রাস্তা রেখে সীমানা প্রাচীর দিয়েছি। প্রাচীরের নিচের ফাঁকা অংশে মাটি ভরাট করতে গেলে আনোয়ার হোসেন ও তার লোকজন বাধা দেয়। এ সময় রাগারাগি করেছি, উল্টো তারা আমাকে গালিগালাজ করেছে।'
পিস্তল উঁচিয়ে হুমকির অভিযোগ প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, 'আমি পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দেইনি। আমার লাইসেন্স করা পিস্তল আছে। তবে সেটা কাউকে হুমকি দেওয়ার জন্য না, সেটা আমার আত্মরক্ষার জন্য।'
আদালতের রায়ের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আনোয়ার বলেন, 'জাকির হোসেন ভুয়া দলিল বানিয়ে আমার বাবার জমি অর্পিত সম্পত্তি দেখিয়ে নিজের পক্ষে একতরফা রায় নিয়েছেন। আমাদের খাজনা-খারিজসহ সব বৈধ কাগজ আছে। উনি মন্ত্রী থাকায় আমরা কিছু করতে পারিনি। এখন রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের প্রস্তুতি নিচ্ছি।'
আবদুল্লা হিল জামান বলেন, 'তদন্ত করে হুমকি দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments