এমপি আনার হত্যা: খুনিদের টাকা দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন আ. লীগ নেতা মিন্টু

আনোয়ারুল আজীম আনার। ছবি: সংগৃহীত

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ডকে কাজ শেষে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু

গত ৫ বা ৬ মে হোয়াটসঅ্যাপে আকতারুজ্জামান শাহিনের সঙ্গে কথা হলে এ আশ্বাস দেন মিন্টু।

৫ জুন ঢাকার একটি আদালতে আনার হত্যাকাণ্ডের সমন্বয়ক আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা জানান।

সাত দিনের রিমান্ডে থাকা ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু তদন্ত কর্মকর্তাদের বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের পরে টাকা দেওয়ার বিষয়ে তিনি আমানুল্লাহর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এবং ফোনে কথা বলেছেন।

এমনকি বাবু ও আমানুল্লাহ মোবাইল ফোনে হত্যার ছবিও আদান-প্রদান করেছেন।

২৩ মে মিন্টুর কাছ থেকে টাকার একটি অংশ আদায় করে আমানুল্লাহকে দেওয়ার কথা ছিল বাবুর।

আদালতে জমা দেওয়া তদন্ত অগ্রগতি প্রতিবেদনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা এ তথ্য জানিয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তারা মিন্টুকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলে আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনার হত্যা মামলায় মিন্টুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, এমপি আনারের সঙ্গে মিন্টুর রাজনৈতিক শত্রুতা ছিল।

তদন্ত কর্মকর্তাদের একজন গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদের দুই কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল।

এমপি আনারের রহস্যজনক হত্যাকাণ্ডের একমাস পরেও মামলার তদন্তকারীরা এখনও এর উদ্দেশ্য জানতে পারেনি। এ ঘটনায় বাংলাদেশে দায়ের করা অপহরণ মামলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতাসহ পাঁচজনকে এবং ভারতে দায়ের করা হত্যা মামলায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ছাড়া, এমপি আনারের মরদেহ এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

বাংলাদেশ ও ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন পর্যন্ত মানুষের শরীরের মাংসের কিছু অংশ ও কিছু হাড় উদ্ধার করেছে। ফরেনসিক প্রতিবেদনে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে মাংসগুলো মানুষের শরীরেরই অংশ। তবে সেগুলো এমপি আনারের কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গত ১২ মে কলকাতায় এক বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন এমপি আনার। পরের দিন ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা বলে চলে যান তিনি।

২২ মে ভারত ও বাংলাদেশের পুলিশ জানায়, এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদ গতকাল জানান, তারা আমানুল্লাহর বক্তব্য থেকে জানতে পেরেছেন যে এমপি আনারকে হত্যার জন্য ২ কোটি টাকা চেয়ে গত ৬ মে এক বাংলাদেশি রাজনীতিবিদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছিলেন শাহিন।

তিনি বলেন, 'এই টাকার মধ্যে ২০ লাখ টাকা (খুনিদের) দেওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশে ফেরার পরে এবং বাকি এক কোটি ৮০ লাখ টাকা ২৬ মে থেকে ২৯ মের মধ্যে পরিশোধ করার কথা ছিল।'

এমপি আনারকে হত্যার পর খুনিরা বাংলাদেশে ফিরে আসে এবং শাহিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান বলে জানান তিনি।

ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, শাহিন এই হত্যাকাণ্ড সমন্বয়ের জন্য আমানউল্লাহকে দায়িত্ব দেন এবং হত্যাকারীদের সঙ্গে টাকা নিয়ে কথা বলার জন্য বাবুকে নিয়োগ করেন মিন্টু।

তিনি বলেন, 'আমরা এখন জানার চেষ্টা করব, হত্যার পর ১৫ মে বাংলাদেশে ফিরে মিন্টুর হয়ে বাবু কেন শাহিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বাবুর মোবাইলে এমপি আনারের মরদেহের ছবি দেখেও মিন্টু কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কিছু জানাননি, তাও আমরা জানতে চাইব।'

Comments

The Daily Star  | English

US to make history either way

Kamala Harris and Donald Trump launched a final frenzied campaign blitz yesterday, hitting must-win Pennsylvania on the last day of a volatile US presidential race that polls say is hurtling towards a photo finish.

8h ago