আসামির স্ত্রীর মাথায় পিস্তল তাক, এসআইসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ

বন্যা বেগমের দিকে পিস্তল ধরে আছেন ডিবি সদস্য। ছবি: ভিডিও থেকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামি ধরতে সাদা পোশাকে অভিযান চালানোর সময় এক নারীর মাথা বরাবর পিস্তল তাক করার ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একজন উপপরিদর্শকসহ (এসআই) আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আজ সোমবার ভুক্তভোগী নারী বন্যা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। তবে আদালত এখনো মামলাটি নথিভুক্ত করেনি।

বাদীর আইনজীবী শওকত আলী জানান, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিমসহ তার আটজন সহকর্মীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে সহকর্মীদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। অভিযোগে বন্যা বেগমের স্বামীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদীপক্ষের কয়েকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এই আইনজীবী আরও জানান, অভিযোগ দায়েরের পর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (দ্রুত বিচার আইন) এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি কিংবা শুনানির বিষয়েও কিছু বলেননি। ফলে মামলাটি এখনো নথিভুক্ত হয়নি।

এদিকে বন্যা বেগমের মাথায় পিস্তল তাক করার ঘটনায় ডিবি পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদিপ্রবাসী নূরুল আলমের বিরুদ্ধে মাসখানেক আগে সদর থানায় মামলা হয়। নূরুল আলম সৌদি থেকে আরেকজনের স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি। নূরুল আলম নিজ বাড়িতে রয়েছেন—এমন খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে ডিবি পুলিশ সদস্যরা সেখানে অভিযান চালান। এ সময় বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সঙ্গে ডিবি পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে এক নারীর মাথায় পিস্তল তাক করেন ডিবি পুলিশের সদস্য। তবে আসামিকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে চলে আসে।

এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ দ্য ডেইলি স্টারের কাছে রয়েছে।

ঘটনার সময় উপস্থিত নূরুল আলমের ছোট ভাই সারোয়ার আলম অভিযোগ করে বলেন, 'সাদা পোশাকে কিছু লোক বাড়িতে ঢুকেই আমার ভাইকে খুঁজতে থাকেন। ভাই বাড়িতে নাই বলার পরেও তারা মানতে চাননি। এ সময় তারা আমার ভাবী বন্যা বেগমসহ কয়েকজনকে মারধর করেন। আমার নয় বছরের ছেলে নিশাতও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।'

এ ঘটনার বেশকিছু ভিডিও পুলিশ ডিলিট করে দিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

সারোয়ার বলেন, 'আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্বর্ণসংক্রান্ত বিষয়ে মামলা হয়েছে। স্বর্ণটি আমার ভাই আনেননি। অন্যের মাধ্যমে আমার ভাইয়ের কাছে দেওয়া হয়েছে, এটা তারাই বলছেন।'

'আমার ভাইকে ধরতে হলে কেন আমাদের বাড়িতে এভাবে হামলা করতে হবে? বিষয়টি আমরা থানা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ পিস্তল তাক করার পাশাপাশি গুলিও করেছে। গুলির খোসা আমাদের কাছে আছে। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে এই গুলির খোসা কার,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
NID cards of Sheikh Hasina and family locked

NIDs of Hasina, 9 family members 'locked'

The NIDs of the 10 listed individuals were locked through an official letter on April 16

2h ago