বারবার আবেদনের পরও ড. ইউনূসকে বিচারিক নথি দেওয়া হচ্ছে না: আইনজীবী

আদালত প্রাঙ্গণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১ জানুয়ারি ২০২৪। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন বলেছেন, যে শ্রম আদালত ড. ইউনূসকে কারাদণ্ড দিয়েছেন, তাদের কাছে বারবার আবেদনের পরও তারা ড. ইউনূসকে বিচার সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দেননি। এর মাধ্যমে তাকে হয়রানি ও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

আবদুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, 'আমরা ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে সাক্ষীদের জবানবন্দি এবং ক্রস এক্সামিনেশন সম্বলিত কাগজপত্রের জন্য আবেদন করেছি, যার ভিত্তিতে আদালত ড. ইউনূস এবং অপর ৩ জনকে সাজা দেন। তৃতীয় শ্রম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের কাছে আপিল করার জন্য এসব কাগজপত্র খুবই প্রয়োজন। আমাদের আইনজীবী প্রতিদিন আদালতের কর্মকর্তাদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের জন্য অনুরোধ করেছেন। তবে আদালতের বিচারক কিংবা রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতির কারণ দেখিয়ে তারা সেই নথিগুলো দিচ্ছেন না।'

তিনি বলেন, 'শ্রম আইনের ২১৭ ধারা অনুসারে শ্রম আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আপিলের জন্য ড. ইউনূসের ৬০ দিন সময় পাওয়ার কথা।'

'তবে আপিলের জন্য ড. ইউনূস এবং অপর ৩ জনকে মাত্র ৩০ দিনের সময় দিয়েছেন শ্রম আদালত, যা সেই আইনের লঙ্ঘন। এতে ড. ইউনূস এবং অপর ৩ জনের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে', বলেন তিনি।

এই আইনজীবী বলেন, 'দেশের সংবিধান অনুসারে আইনের চোখে সবাই সমান এবং সবারই সমান সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তা সত্ত্বেও ড. ইউনূসকে তার সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।'

এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, 'যদিও আমরা খুব কঠিন অবস্থায় আছি এবং তৃতীয় শ্রম আদালতের কাছ থেকে বিচার সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র এখনো পাইনি, তারপরও এই রায়ের বিরুদ্ধে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূস এবং অপর ৩ জনের পক্ষ থেকে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের কাছে আপিল করা হবে।'  

ড. ইউনূসের সঙ্গে যা ঘটছে, তা সারাবিশ্ব এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো অধীর আগ্রহে প্রত্যক্ষ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সংশ্লিষ্ট শ্রম আদালত আন্তরিক থাকলে এক বা দুই ঘণ্টার মধ্যে এসব কাগজপত্র দিয়ে দিতে পারতেন।'

শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় গত ১ জানুয়ারি ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের ৩ শীর্ষ কর্মকর্তাকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত।

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস এবং শীর্ষ কর্মকর্তা আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহানের নামে এই মামলা করা হয়।

রায়ের পরপরই পৃথক জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই আদালত এই ৪ জনকে এক মাসের জন্য জামিন দেন।

একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা প্রদানে ব্যর্থ হলে তাদের অতিরিক্ত ২৫ দিন কারাভোগ করতে হবে বলে রায় দেওয়া হয়। 

এ ছাড়াও, আদালত তাদের এক মাসের মধ্যে শ্রম আইন-২০০৬ এর প্রাসঙ্গিক ধারাগুলি মেনে চলার নির্দেশ দেন।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

8h ago