ঘারিন্দা স্টেশনে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনে আগুন

টাঙ্গাইলে ঘারিন্দা রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা কমিউটার ট্রেনে আগুন লেগেছে। এতে ট্রেনটির দুটি বগি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে এবং আরেকটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে কীভাবে আগুন লেগেছে বা কেউ আগুন লাগিয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

আজ বৃহস্পতিবার ভোররাত ২টা ৫৩ মিনিটে দিকে এই ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার সময় কমিউটার ট্রেনের পাশেই ছিল পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে থাকা যাত্রীরা ভয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন।

স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঘারিন্দা রেলস্টেশনে সিসি ক্যামেরা থাকলেও ট্রেনটির যে বগিগুলোতে আগুন লেগেছে সেই অংশ সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে ছিল।

টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ ইদ্রিছ বলেন, রাত ৩টার দিকে খবর পেয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। ট্রেনের ইঞ্জিনের কাছাকাছি দুটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমিউটার ট্রেনটি টাঙ্গাইল টু ঢাকামুখী অভিমুখে স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল।

পুলিশের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, রাত ৩টায় পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন টাঙ্গাইল স্টেশন ত্যাগ করার পর আগুন লাগেন। আগুনের সূত্রপাত তদন্ত শেষে জানা যাবে।

ঘারিন্দা স্টেশন মাস্টার তরিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাতে কে বা কারা ট্রেনে আগুন ধরিয়েছে সেটা জানা যায়নি। এতে কমিউটার ট্রেনের দুই বগি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আরও একটি বগি আংশিক পুড়েছে।'

'ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন 'পাশেই পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি থাকলেও তাতে আগুন লাগেনি।'

টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের পরিচালক আবু নাইম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কমিউটার ট্রেনটি রাত ১২টায় ঘারিন্দা স্টেশনে পার্ক করা হয়। রাত ২টা ৫৩ মিনিটে ধোঁয়া দেখে তারা গিয়ে দুটি বগিতে আগুন দেখতে পান। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভায়।

তিনি আরও জানান, স্টেশনে অতিরিক্ত আনসার মোতায়েন থাকলেও কীভাবে আগুন লেগেছে বা কেউ আগুন লাগিয়েছে কি না, তারা তা বুঝতে পারেনি। আগুন লাগার পর নিরাপত্তার স্বার্থে প্রথমে ইঞ্জিনটিকে ট্রেন থেকে আলাদা করা হয়। এ ছাড়া ওই সময় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি স্টেশনে চলে আসায় আগুন নেভানোর কাজ ব্যাহত হয়।

টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন ডেইলি স্টারকে জানান, ৩টা ৫ মিনিটে জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে করা কলের মাধ্যমে তারা ট্রেনে আগুন লাগার খবর পান এবং সোয়া ৩টচার দিকে তারা ঘটনাস্থলে সেখানে পৌঁছান। পৌনে চারটার মধ্যে তারা আগুন নেভাতে সক্ষম হন। ততক্ষণে দুটি বগি একদম পুড়ে গেছে এবং একটি বগি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঘারিন্দা রেলস্টেশনের রেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলী আকবর ডেইলি স্টারকে জানান, আগুন লাগার পর প্রথম এক কিশোর এসে সংবাদটি জানায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এলে তারা আগুন নেভাতে তাদের সহায়তা করেন।

ঘটনার পর সকালে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এডিএম সোহেল রানা ডেইলি স্টারকে জানান, ঘটনাটি তারা তদন্ত করছেন। ঘটনাটি নাশকতা কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। তদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শরিফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, ট্রেনে আগুন লাগার খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ট্রেনচালক পুলিশকে জানিয়েছেন, সকাল ৭টা ২ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়ার কথা ছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Fakhrul calls for unity among parties to restore democracy

Says empowering people through elections is the shared responsibility of all political forces

54m ago