চট্টগ্রামে রিজওয়ানার গাড়িতে ‘কাউন্সিলরের অনুসারীদের’ ঢিল

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানায় পাহাড় কেটে ভরাট করা ছড়া পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে লেকসিটি আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় রিজওয়ানা হাসানকে বহনকারী গাড়িটি আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ গাড়িটি উদ্ধার করে।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা বলছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। জহুরুল আলম উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, দুপুর পৌনে ১টার দিকে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে বেলার একটি দল আকবরশাহ থানা এলাকার লেকসিটি আবাসিক এলাকায় পাহাড় কাটার স্থান পরিদর্শনে যায়। প্রথমে লেকসিটি আবাসিক এলাকা পেরিয়ে কালিরছড়া খাল ভরাটের জায়গাটি পরিদর্শন করেন তারা। এ সময় কয়েকজন যুবক তাদের অনুসরণ করতে থাকেন।

পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকরাও দলটির সঙ্গে ছিলেন। এ সময় এক যুবক গিয়ে রিজওয়ানা হাসানের কাছে পরিচয় জানতে চান এবং কেন তারা সেখানে গিয়েছেন জানতে চান। এ সময় বেলার কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া হয়। পরে কালিরছড়া খাল ও পাহাড় কাটা পরিদর্শনের সময় কাউন্সিলর জহুরুল আলমের নেতৃত্বে ১৫–২০ জন যুবক সেখানে হাজির হন জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাদের মারমুখী অবস্থানের কারণে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে থানা পুলিশকে জানানো হয়। নিরাপত্তার জন্য বায়েজিদ সংযোগ সড়কে গিয়ে পৌঁছায় বেলার দলটি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'যুবকদের মারমুখী অবস্থানের কারণে আমরা পরিদর্শন কাজ অসমাপ্ত রেখে বায়েজিদ সংযোগ সড়কে একটি চায়ের দোকানে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এ সময় কিছু যুবক অস্ত্র নিয়ে আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। এরমধ্যে গাড়ির চালক খবর দিলেন, লেকসিটি গেটে গাড়ি আটকে রেখেছে। পরে পুলিশকে বলে গাড়ি ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয়। গাড়িতে উঠার সময় আমাদের ওই যুবকরা ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মারে।'

ধাওয়া করে আসা যুবকেরা গালিগালাজ করছিলেন এবং চালক দ্রুত গাড়িটি চালিয়ে স্থান ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন উপস্থিত সাংবাদিকরা।

আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, 'পুলিশ খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করেছেন। তারপরও একটি ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।'

জানতে চাইলে কাউন্সিলর জহুরুল আলম বলেন, 'আমাদের লোকজন সেখানে ছিলেন। কিন্তু কাউকে পাথর মারার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি আমার ফার্মহাউসের ভেতরেই বসে ছিলাম। আমার নাম কেন আসছে সেটা আমার বোধগম্য নয়।'

স্থানীয়দের অভিযোগ, লেকসিটিতে জহুরুল আলমের নেতৃত্বে পাহাড় কাটা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জহুরুল আলম বলেন, 'লেকসিটিতে আগেই পাহাড় কাটা ছিল। আমার বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ সত্য নয়।

Comments