‘১ হাজার অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের প্রতিটিতে দৈনিক লেনদেন ৭০-৭৫ লাখ টাকা’

সিআইডির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

দেশে ১ হাজারেরও বেশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের প্রতিটিতে দৈনিক গড়ে ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় হয় বলে জানিয়েছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি সদর দপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত আইজিপি ও সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

এসব অর্থের বেশিরভাগই হুন্ডি ও লন্ডারিং হচ্ছে বলেও জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। যার ফলে জ্বালানী তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি বিরাজমান। বাংলাদেশও এর অবশ্যম্ভাবী প্রভাব পড়েছে।'

'এই পরিস্থিতিতে দেশের কিছু অসাধু বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসায়ী লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এবং অধিক মুনাফার জন্য মার্কিন ডলার মজুদ করে দাম বাড়াচ্ছে। ৮৫ টাকার মার্কিন ডলার ১২৩ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এ কাজে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের চেঞ্জারের যেমন ভূমিকা ছিল তেমনি কিছু কিছু বৈধমানি এক্সচেঞ্জারের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ডলারের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় সিআইডি ইতোমধ্যে বেশ কিছু অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে।'

সিআইডি প্রধান জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে বাংলাদেশে ২৩৫টি লাইসেন্সধারী বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ১ হাজারের বেশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া অনেকে নাম-ঠিকানাবিহীন ভাসমান অবস্থায় হাতে-হাতে, কাঁধে ব্যাগ বহন করে মতিঝিল, গুলশান, উত্তরা এবং বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ব্যবসা করে আসছে বলে জানা যায়।

অবৈধভাবে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা এবং এর আড়ালে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার সংক্রান্তে সিআইডি সম্প্রতি অভিযান চালাচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় গতকাল সিআইডির বিশেষ টিম ঢাকা মহানগরীর ৫টি স্থানে (গুলশান-১, রিংরোড, মোহাম্মদপুর, আশকোনা, এবিমার্কেট, চায়না মার্কেট, উত্তরা) একযোগে অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রাসহ মোট ১৪ জনকে আটক করে।

এ সময় আসামীদের কাছ থেকে ১ কোটি ১১ লাখ ১৯ হাজার ৮২৬ টাকা সমমূল্যের ১৯টি দেশের বৈদেশিক মুদ্রাসহ সর্বমোট ১ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৬ টাকা জব্দ করা হয়।

আসামিরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজস্ব অফিস এবং ভাসমান যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি (লাইসেন্স) ব্যতিত বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছেন, উল্লেখিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় করে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে ৪টি থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৫টি মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

Comments

The Daily Star  | English

Jatrabari turns into battlefield as students clash

Students of three colleges clashed at Dhaka's Jatrabari today, turning the area into a battlefield

1h ago