ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৭

ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত

ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মাদ্রাসা অডিটের নামে চাঁদা দাবি করায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থেকে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় আলফাডাঙ্গা পৌর এলাকায় বাকাইল মাদ্রাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে উপজেলার বুরাইচ ইউনিয়নের ইউসুফেরবাগ গোরস্থান মাদ্রাসা ও এতিমখানার পরিচালক মো. শরফুদ্দিন মোল্লা (৪৯) বাদী হয়ে সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন নোয়াখালী জেলার সুধারাম উপজেলার সোনাপুর গ্রামের রাকিবুল হায়দার (৩০)। 

এ ছাড়া সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জামালপুর জেলার সদর উপজেলার খরখড়িয়া গ্রামের রেজাউল করিম খান (২৫), গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার মোঘরখাল গ্রামের আরাফাত হোসেন (২৩), গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার মধ্য চান্দড়া গ্রামের শামীম হোসেন (৪০), শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের জীবনী (১৮) ও জামালপুর জেলার সদর উপজেলার জুয়াইলপাড়া (সুলটিয়া বাজার) গ্রামের সোমা (১৮)।

এ ছাড়া তারা যে মাইক্রোবাসে করে সেখানে গিয়েছিলেন ওই মাইক্রোবাসের চালক আতাউর রহমানকে (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আতাউরের বাড়ি গাজীপুরের বাসন উপজেলার দিঘীরচালা গ্রামে।

মামলার বাদী শরফুদ্দিন মোল্লা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি জানতে পারেন মাদ্রাসা অডিট করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক এসেছে। এ খবর শুনে তিনি দ্রুত মাদ্রাসায় গেলে ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাকে জানানো হয়, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনেক দুর্নীতি হচ্ছে। সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে তারা মাদ্রাসায় অডিট করতে এসেছেন।  

শরফুদ্দিন মোল্লা আরও বলেন, তারা অডিট খরচের টিএডিএ বাবদ তার কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা নেয় এবং অডিট খরচ বাবদ আরও ৪০ হাজার টাকা দাবি করে। বাকি টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর নির্দেষ দেয়। এরপর সন্ধ্যার দিকে তারা পৌর এলাকার বাঁকাইল মাদ্রাসায় ঢুকে একইভাবে মাদ্রাসার পরিচালকের কাছে টাকা দাবি করে। 

বাকাইল মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইদ্রিস আলী (৫০) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তাদের কথাবার্তা ও আচরণ দেখে সন্দেহ হলে তিনি বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান।   
 
আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সেকেন্দার আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাকাইল মাদ্রাসা থেকে খবর পেয়ে আমি কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে ওই মাদ্রাসায় যাই। অডিটে আসা ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিকদের আইডি কার্ড যাচাই করে তাদের অফিসে কথা বলে জানতে পারি ওই নামে তাদের কোনো সংবাদিক নেই। পরে আলফাডাঙ্গা পুলিশে খবর দেওয়া হয়।'

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলফাডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউনুচ আলী বিশ্বাস বলেন, ওই ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি মাইক্রোবাস, একটি ক্যামেরা, ৫টি মুঠোফোন, চার্জার এবং দৈনিক প্রথম বেলা, দৈনিক বিজয় বাংলা, দৈনিক নাগরিক ভাবনাসহ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার একাধিক ভুয়া আইডি কার্ড ও কিছু ভুয়া কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। 
 
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ওই ব্যক্তিরা মূলত একটি প্রতারকচক্র। তাদের কাছে বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র পাওয়া গেছে। প্রাথমিক পর্যায় তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তা ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। 

সহকারী পুলিশ সুপার (মধাখালী সার্কেল) সুমন রায় বলেন, '২ নারীসহ মোট ৭ জনকে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka sends diplomatic note to Delhi to send back Hasina: foreign adviser

The Ministry of Foreign Affairs has sent a diplomatic note to the Indian government to send back ousted former prime minister Sheikh Hasina to Dhaka.

4h ago