ধর্ম অবমাননার অভিযোগ: ঝুমন দাশকে আবারও তুলে নিয়েছে পুলিশ

ঝুমন দাশ আপন। ছবি: সংগৃহীত

ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দিয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁওয়ের সেই ঝুমন দাশ আপনকে আবারও থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াগাঁওয়ের ঝুমনের বাড়ি থেকে তাকে শাল্লা থানায় নিয়ে যায় পুলিশের একটি দল। সন্ধ্যা ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাকে থানাতেই আটকে রাখা হয়েছে।

ঝুমনের স্ত্রী সুইটি দাশের দাবি, ধর্ম অবমাননাকর কোনো পোস্ট দেননি ঝুমন, বরং তাকে হয়রানি করতেই আবারও তুলে নিয়েছে পুলিশ। 

তবে পুলিশ বলছে, আগের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই ঝুমন দাশকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে।

গত বছরের ১৬ মার্চ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সে রাতেই ঝুমন দাশকে আটক করে পুলিশ। পরদিন পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁওয়ে হামলা চালিয়ে অন্তত ৯০টি ঘর, ৪টি মন্দিরে ভাঙচুর চালায় এবং লুটপাট করে।

আটকের ৬ দিন পর ২২ মার্চ শাল্লা থানা পুলিশ বাদী হয়ে ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করে। এ মামলায় প্রায় ৬ মাস জেলে থাকার পর ২৮ সেপ্টেম্বর শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্ত হন ঝুমন।

ঝুমন দাশের স্ত্রী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ সাড়ে ১১টার দিকে ঝুমনকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ বলছে, তিনি ধর্ম অববমাননাকর পোস্ট দিয়েছেন, কিন্তু তার দেওয়া সাম্প্রতিক কোনো পোস্টই ধর্ম অবমাননাকর না। তাকে হয়রানি করতেই থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি নিজেও দুপুর থেকে থানায় অবস্থান করছি।'

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের দিরাই সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবু সুফিয়ান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিরাজগঞ্জের একটি মন্দিরের সামনে মসজিদের দানবাক্স লাগানো, এটা নিয়ে ঝুমন কয়েকদিন আগে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টে ৬-৭ লাইনের মতো ধর্ম অবমাননাকর কথা লেখা আছে। এটা নিয়ে কথা বলতেই তাকে থানায় আনা হয়েছে।'

'তবে ঝুমন দাশ বলেছেন যে, তিনি ওইরকম পোস্ট দিয়েছেন-কী দেননি তা মনে করতে পারছেন না। এখন বিশেষজ্ঞ ছাড়া এটা নিশ্চিত হওয়া যাবে না। পোস্টটি তিনি ডিলিট করে দিয়েছেন বলে এখন তার ওয়ালে সেটি নেই। তবে ততক্ষণে অনেকেই দেখেছেন, অনেক কমেন্ট হয়েছে। এ কারণে ওই এলাকায় ২ দিন ধরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে গতবার যা হয়েছে তা আবারও যেন না হয়', বলেন তিনি।

সার্বিক বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসলে তখন সে আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে জানতে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

Comments

The Daily Star  | English

New uniform, monogram sans boat on the cards for police

According to police sources, a new monogram for the Bangladesh Police has already been determined. It will no longer feature a boat

5h ago