৭ দিনে ধরলার উদরে অন্তত ১৫০ বিঘা জমি, দিশেহারা কৃষক

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বনগ্রাম এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটারজুড়ে চলছে ধরলা নদীর ভাঙন। ছবি: স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বনগ্রাম এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটারজুড়ে চলছে ধরলা নদীর ভাঙন। প্রতিনিয়ত নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে ফসলি জমি, ভাঙন হুমকিতে রয়েছে শতাধিক বসতভিটা।

ফসলি জমি ধরলার উদরে চলে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের কৃষক। জরুরিভিত্তিতে ভাঙন ঠেকানো না গেলে বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বনটুকুও হারাবেন তারা।

বনগ্রাম এলাকার কৃষক সুরেশ চন্দ্র বর্মণ (৬৮) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত কয়েক বছরে ধরলা নদীর ভাঙনে ২০ বিঘা আবাদি জমির মধ্যে ১৫ বিঘা হারিয়েছি। গত সপ্তাহে আরও ১ বিঘা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। জমিতে ধান ছিল। বাকি ৪ বিঘা জমি ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। এটুকুও যদি না থাকে, আমি নিঃস্ব হয়ে যাবো। এই জমিটুকুই আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।'

গত ১ সপ্তাহে ধরলার ভাঙনে ১ বিঘা জমির অর্ধেকই বিলীন হয়েছে চাম্পা বেওয়ার। ছবি: স্টার

একই গ্রামের চাম্পা বেওয়া (৬৭) বলেন, 'গত ১ সপ্তাহে ধরলার ভাঙনে আমার ১ বিঘা জমির অর্ধেকই বিলীন হয়েছে। বাকিটুকুও ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। ৬ শতাংশ জমির ওপর আমার বসতভিটা। সেটাও নদীতে চলে যাবে মনে হচ্ছে। ধান কাটার আগেই জমি চলে গেল নদীতে।'

গত ১৫ বছরে তার ১০ বিঘা আবাদি জমি ধরলা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'ধরলার ভাঙন আমাদেরকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।'

বনগ্রাম এলাকার কৃষক নফেস আলী (৬৫) জানান, তিনি ৬ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। এখনো বাদাম ঘরে তুলতে পারেননি। এরমধ্যেই প্রায় ২ বিঘা জমি ভেঙে গেছে নদীতে। তার বসতভিটাও ভাঙন হুমকিতে পড়েছে।

কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী বলেন, 'গত ১ সপ্তাহের ভাঙনে বনগ্রাম এলাকার প্রায় দেড়শ বিঘা আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে আরও কয়েকশ বিঘা জমি। এসব জমিতে ধান, বাদামসহ বিভিন্ন ফসল রয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে শতাধিক বসতভিটাও। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। তারা বলছে বরাদ্দ নেই, তাই কিছু করতে পারবে না।'

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, 'ধরলা ও তিস্তা নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বরাদ্দ না থাকায় ভাঙনকবলিত সবগুলো স্থানে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে প্রাথমিকভাবে ভাঙন ঠেকানো হচ্ছে। বনগ্রাম এলাকায় ধরলা নদীর ভাঙন পরিদর্শন করা হয়েছে এবং বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

7h ago