বৃষ্টিতে প্রাণ পেয়েছে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামের আমন খেত

লালমনিরহাট আমন খেত
লালমনিরহাট সদর উপজেলার বিশবাড়ী গ্রামে আমন খেত। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

আমন চাষ বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। বৃষ্টি না হওয়ায় চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন চাষিরা। আশঙ্কা করছিলেন, এ বছর হয়তো আমনের আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে না। কিন্তু, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আমনের খেতে প্রাণ ফিরেছে।

উপরন্তু, পোকার আক্রমণ না থাকলে এ বছর আগের তুলনায় আমনের ফলন বেশি পাওয়ার আশা করছেন কৃষক।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বিশবাড়ী গ্রামের কৃষক গণেশ চন্দ্র রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃষ্টি না থাকায় প্রথমে ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করতে হয়েছে। বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টি না হওয়ায় খেতের মাটি ফেটে গিয়েছিল। আশানুরূপ ফলনের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।'

লালমনিরহাট আমন খেত
ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

'গত শুক্রবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ধানের খেত প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আগের তুলনায় আমনের বেশি ফলনের আশা করছি।'

'এ বছর ৭ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'গত কয়েকদিনের বৃষ্টি আমাদের স্বস্তি এনে দিয়েছে।'

আদিতমারী উপজেলার দৈলজোর গ্রামের কৃষক হাসেম আলী মন্ডল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃষ্টির অভাবে এ বছর ১৩ বিঘার পরিবর্তে ৯ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। সেচের জন্য বাড়তি খরচ হয়েছে।'

'তবে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে খেতগুলো সবুজে ভরে গেছে। দেখে প্রাণজুড়ে যাচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম।'

তিনি মনে করেন, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না থাকলে এ বছর আমনের সন্তোষজনক ফলন পাওয়া যাবে।

হাসেম আলী আরও বলেন, 'এ বছর প্রতি মণ আমন উৎপাদনে খরচ হবে ৯০০-৯৫০ টাকা। এটি গত বছরের তুলনায় ১৮০-২০০ টাকা বেশি। সেচের জন্য বাড়তি খরচ; সার, ডিজেল ও কীটনাশকের দাম বেশি; শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে।'

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সেকেন্দার আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভরা বর্ষায় খরার কারণে আমনের আশানুরূপ ফলনের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আশা ফিরে পেয়েছি। এ বছর ১২ বিঘা জমি থেকে ১৪৪-১৫০ মণ ধান পাওয়ার আশা করছি। গত বছর ১৩৮ মণ ধান পেয়েছিলাম।'

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কুড়িগ্রামে ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লালমনিরহাটে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। বৃষ্টি না হওয়ায় এখনো ৩০-৩৫ শতাংশ জমিতে কৃষক আমনের চারা লাগাতে পারেননি।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমন চাষ বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। এ বছর ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিনে ভূ-গর্ভস্থের পানিতে চাষ করতে হয়েছে। কৃষককে বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টি না হওয়ায় তারা আমনের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন।'

'গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কৃষকরা খুশি' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমনের আশানুরূপ ফলন আশা করা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
BNP demands national election by December 2025

2014, 2018, 2024 polls: BNP to sue former ECs, officials today

BNP is set to file a case against officials involved in the last three national elections with Sher-e-Bangla Nagar police today. The party will also lodge a formal complaint with the Election Commission in this regard, BNP leaders said yesterday.  

4h ago