কচুর লতি চাষে লাভবান কৃষক

কচুর লতি
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ধরলা নদীপাড়ে বুমকা গ্রামে নিজের চাষ করা কচুর লতি দেখাচ্ছেন এক কৃষক। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কচুখেত থেকে বাড়তি ফসল হিসেবে পাওয়া যায় লতি। গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ বেশি দামে লতি বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষক।

প্রতি বিঘা কচুখেতে ১৫০ থেকে ২০০ কেজি পর্যন্ত লতি পাওয়া যায়। এ থেকে বাড়তি আয় করেন কৃষক।

বর্তমানে প্রতি কেজি কচুর লতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছরের চেয়ে ৩ গুণ বেশি। বাজারে লতির চাহিদাও বেশ ভালো।

সবজি বিক্রেতারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত বছর প্রতি কেজি কচুর লতি বিক্রি হয়েছে ১২ থেকে ১৫ টাকা দরে। এ বছর বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।

লতির দাম আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বুমকা এলাকার কৃষক বিমল চন্দ্র বর্মণ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক বিঘা জমিতে কচু লাগিয়েছি। ইতোমধ্যে ৭০ কেজি লতি বিক্রি করেছি ৪০ টাকা দরে। আরও অন্তত ৫০ থেকে ৬০ কেজি লতি হবে।'

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের কৃষক দিলবর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খেতে বই কচু, বাক্স কচু ও কাঠ কচু বেশি চাষ করি। বই কচু সাধারণত উঁচু জমিতে চাষ করতে হয়। কাঠ ও বাক্স কচু চাষ করতে হয় নিচু জমিতে। গত বছরগুলোয় কচু চাষ করে তেমন লাভ হয়নি। এবার ভালো লাভ হচ্ছে। বিশেষ করে, লতি বিক্রি করে ভালো টাকা পাচ্ছি।'

তিনি আরও বলেন, 'এ বছর ৪ বিঘা জমিতে কচু চাষ করেছি। কচু চাষে ৬ মাস সময় লাগে বলে অনেকে এ সবজি চাষে আগ্রহী হন না।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চওড়াটারী গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমানে কচুর চেয়ে লতির চাহিদা বেশি।'

তিনি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে কচু চাষ করে ইতোমধ্যে ৪০০ কেজি লতি বিক্রি করেছেন। আশা করছেন আরও প্রায় ৫০০ কেজি লতি বিক্রি করতে পারবেন।

কুড়িগ্রাম পৌর কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা বেলাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চাহিদা অনুযায়ী লতি পাচ্ছি না। ক্রেতা অনেক কিন্তু লতি সেই তুলনায় বেশি নেই। গত বছরের তুলনায় এ বছর লতির দাম বেশি হলেও ক্রেতারা কিনছেন।'

লালমনিরহাট শহরের কলেজ শিক্ষক মোবারক হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কচুর লতি খুবই পুষ্টিকর। পরিবারের সবাই পছন্দ করে।'

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও রংপুর জেলায় ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে কচু লাগানো হয়েছে। কচু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন এবং লতি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার মেট্রিক টন।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কচুর লতি একটি বাই-প্রোডাক্ট। এ বছর অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় কচুর উৎপাদন কিছুটা কম হলেও আশানুরূপ দাম পেয়ে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। বিশেষ করে, লতি বিক্রি করে করে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক খুশি।'

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles; properties vandalised

3h ago