৩ সহকর্মীকে হারিয়ে সীতাকুণ্ড থানায় শোকের ছায়া

সীতাকুণ্ডের ফকিরপাড়া রেলক্রসিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে নিহত সহকর্মীদের নিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। ছবি: স্টার

পুলিশের বিশেষ শাখায় কর্মরত মো. সালাউদ্দিন লিটন কাজ করেন সীতাকুণ্ড থানায়। লেভেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় যে তিনজন নিহত হয়েছেন তদের মধ্যে হোসাইনের সঙ্গে একই ব্যারাকে থাকতেন তিনি। তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না হাসান মারা গেছেন।

সহকর্মীদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সীতাকুণ্ড মডেল থানায়।

সালাউদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকালে আমি শুয়ে ছিলাম। আমার পাশের বিছানাতেই থাকতেন হাসান। তার মুখে সবসময় হাসি থাকত। সকাল ৭টার দিকে তাকে পোশাক পরিবর্তন করতে দেখে জানতে চাইলাম কোথায় যাচ্ছেন? বললেন, ডিউটি আছে। তার সঙ্গে শেষ কথা এটাই। কে জানত এমন পরিণতি হবে!'

চোখের পানি মুছে আবার বলেন, 'কিছুদিন আগে কক্সবাজারে তার বাবা মারা যায়। বাবাকে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠে বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন তিনি। সব শেষ এখন।'

লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হোসাইন। ছবি: সংগৃহীত

হোসাইন ২০১২ সালে পুলিশে যোগদান করেন। তার বাড়ি কক্সবাজার জেলায়।

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বিচ্ছিন্ন জনপদ উড়িরচরে দায়িত্ব পালনের সময় এক প্রতিবন্ধীর ঘর তৈরি করতে কায়িক শ্রম দিয়ে সহায়তা করেছিলেন হোসাইন। তার মৃত্যুতে সন্দ্বীপে অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সন্দ্বীপের উড়িরচরের বাসিন্দা নুর নবি রবিন দা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দরিদ্র একজনের ঘর বানিয়ে দিছিলাম আমরা। হোসাইন আমাদের সঙ্গে মাটি কাটার কাজ করেছিল। তিনি এভাবে চলে গেলেন ভাবতে পারছি না।'

সীতাকুণ্ড থানার আরেক কনস্টেবল জামিল তার মোবাইল ফোনে নিহত সহকর্মীদের ছবি দেখে পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করছিলেন।

স্ট্রেচারে সহকর্মীর মৃতদেহের ছবি দেখে তিনি বলেছিলেন, তাদের সঙ্গে কত খুনসুটি করেছি। এভাবে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া যায় না।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, 'এই ঘটনায় মামলা হবে। রেলওয়ের এসপি স্যার এসেছিলেন। সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।'

আজ রোববার সীতাকুণ্ডের ফকিরপাড়া রেল ক্রসিংয়ে পুলিশের টহলগাড়িতে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। এতে তিন পুলিশ সদস্য নিহত হন। আহত হন আরও দুই পুলিশ সদস্যসহ স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিহতরা হলেন পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ হোসাইন, এস্কান্দার আলী মোল্লা ও মিজানুর রহমান। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন এস আই সুজন শর্মা ও চালক কনস্টেবল সমর চন্দ্র।

হোসাইনের বাড়ি কক্সবাজার জেলায়। মিজানুরের বাড়ি গোপালগঞ্জ মুকসুদপুরে এবং এসকান্দারের বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারীতে।

 

Comments

The Daily Star  | English
VAT changes by NBR

NBR revises VAT, SD on 9 items following public outcry 

NBR said it has slashed VAT on ready-made clothes, restaurants, sweets, non-AC hotels and motor workshops and mostly restored to the previous levels

1h ago