সাগরে ৪ দিন ভেসে থাকা পটুয়াখালীর জেলে ভারতে মারা গেছেন
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে ভারতে উদ্ধার হওয়া এক জেলে মারা গেছেন। ভারতীয় জেলেদের হাতে উদ্ধার হওয়ার আগে চার দিন সাগরে ভেসে ছিলেন তিনি।
গত শুক্রবার সকালে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপে একটি হাসপাতালে মারা যান ইউনুস গাজী (৪৭)। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বিপিনপুর এলাকায় তার বাড়ি।
পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্য বন্দর ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি দিদারুল ইসলাম মাসুম রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউনুস গাজীর মেয়ে চম্পা বেগম বলেন, ভারতের চিকিৎসক বলেছেন, বাবা চার দিন সাগরে ভেসে ছিলেন। এতে তার শরীরের চামড়া খসে যায়। দুই দিন আইসিইউতে ভর্তি থাকার পর শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান।
চম্পা আরও জানান, কলাপাড়ার বাবুল কোম্পানির এফভি জান্নাত ট্রলারে ১৫ আগস্ট বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যান তার বাবা। তিন দিন পর ট্রলারটি ঝড়ের কবলে পড়ে। ১৯ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে ট্রলারটি ডুবে যায়। বাকি ১৪ মাঝিমাল্লা বাড়িতে ফিরলেও আট দিন নিখোঁজ ছিলেন তার বাবা।
ট্রলারডুবির চার দিন পর বঙ্গোপসাগর থেকে তার বাবাকে ভারতীয় জেলেরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। গত বুধবার ভারতের এক চিকিৎসক পটুয়াখালীতে ইউনুস গাজীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ভিডিও কলে বাবার সঙ্গে কথা বলেন চম্পা।
ইউনুস গাজীর স্ত্রী ফাতিমা বেগম বলেন, 'সাগরে আমার স্বামী বাঁচার জন্য অনেক যুদ্ধ করছেন। তার পরও বাঁচতে পারেনি। আমি শেষবারের মতো স্বামীকে দেখতে চাই। আমার বাড়ির সামনে কবর দিতে চাই।'
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাজী ফজলু গাজী জানান, ইউনুস গাজীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভারতে পাঠানো হয়েছে। ইউনুস গাজীই পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস ছিলেন। ছোট ছোট পাঁচটি সন্তান আছে তার। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ঝড়ের কবলে ভারতে ভেসে যাওয়া জেলেদের উদ্ধার করতে যাওয়া বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, 'কাকদ্বীপে ৪৬ জেলে, রায়দিঘি থানায় ১১ এবং কোস্টাল পুলিশ স্টেশনে ১৭ জন বাংলাদেশি জেলে আছেন। তাদের মধ্যে কাকদ্বীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইউনুস গাজী মারা গেছেন। তার মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। আমরা সরকারের মাধ্যমে তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই।'
এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, ইউনুস গাজীর মৃত্যুর বিষয়টি তার স্বজনদের কাছ থেকে জেনেছি।
Comments