দক্ষিণ এশিয়া

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান 'নিখোঁজ', জল্পনা

বিদ্রোহী বাহিনী দাবি করেছে,  ৮ ও ৯ এপ্রিল মালামিনে শহরের কমান্ড হেডকোয়ার্টারে ড্রোন হামলা চালানোর সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সো উইন। তবে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে তার এই সফরের বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিং অং হ্লাইং ও উপ-প্রধান সো উইন। ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান অং মিং হ্লাইং ও উপ-প্রধান সো উইন। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমার সামরিকবাহিনীর উপ-প্রধান সো উইনকে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জনসম্মুখে আসতে দেখা যায়নি। তার নিয়তি নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।

গতকাল শনিবার এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।

অনেকে ভাবছেন ৯ এপ্রিল বিদ্রোহীদের ড্রোন হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন সো উইন।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী সো মিয়াওয়াদি টাউনশিপের প্রতিরক্ষার বিষয়টি দেখভাল করছিলেন। এ সময় বিদ্রোহীরা সেখানে ড্রোন হামলা চালায়।

মিয়ানমারের প্রথাগত নববর্ষ উদযাপনের সময় প্রশাসনিক রাজধানী নেপিডোতে সো উইনের অনুপস্থিতি অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করে। এর আগে কখনোই তিনি এই আয়োজনে অনুপস্থিত থাকেননি।

সামরিক জান্তার প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং মান্দালায়ের সামরিক প্যাভিলিয়নে আয়োজিত থিনগিয়ান উৎসবে যোগ দেননি।

মূলত শহরটিতে বিদ্রোহীদের রকেট হামলার কারণে এতে যোগ না দিলেও কারণ হিসেবে 'পায়ে ব্যথার' কথা উল্লেখ করেন তিনি।

তবে তার পরিবর্তে স্ত্রী কি কি হ্লা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

একইসঙ্গে, নেপিডোর অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন সো উইনের স্ত্রী থান থান। গুজব উঠেছে, আহত স্বামীর সেবায় ব্যস্ত তিনি।

সর্বশেষ দক্ষিণের শান রাজ্যের বা হিটু শহরের সামরিক ঘাঁটিতে সফর করেন সো উইন। ৩ এপ্রিলের এই সফরের পর সো উইনকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।

বিদ্রোহী বাহিনী দাবি করেছে,  ৮ ও ৯ এপ্রিল মালামিনে শহরের কমান্ড হেডকোয়ার্টারে ড্রোন হামলা চালানোর সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সো উইন। তবে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে তার এই সফরের বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী শার হতু বাও টেকনিকাল ফোর্সের একটি ইউনিট এই ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করেছে। ইউনিটের নাম আলফা ব্যাটস ড্রোন ফোর্স।

শার হতু বাও টেকনিকাল ফোর্সের মুখপাত্র জানান, ৯ এপ্রিলের ড্রোন হামলায় একজন ট্যাকটিকাল কমান্ডার, ডেপুটি আর্টিলারি ডিরেক্টর ও সাউথ ইস্টার্ন কমান্ডের এক কর্নেল নিহত হয়েছেন।

সর্বশেষ দক্ষিণের শান রাজ্যের বা হিটু শহরের সামরিক ঘাঁটিতে সফর করেন সো উইন। ৩ এপ্রিলের এই সফরের পর সো উইনকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি। ছবি: সংগৃহীত
সর্বশেষ দক্ষিণের শান রাজ্যের বা হিটু শহরের সামরিক ঘাঁটিতে সফর করেন সো উইন। ৩ এপ্রিলের এই সফরের পর সো উইনকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি। ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও জানান, এই হামলার সময় সো উইনের ওপর একটি বিম ভেঙে পড়লে তিনি গুরুতর আহত হন।

সো উইন মারা গেছেন—এমন গুজবের মুখে ১০ এপ্রিল জান্তার মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বিবিসিকে জানান, তিনি এবং সো উইন নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি ১৭ এপ্রিল ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, সো উইন ড্রোন হামলায় আহত এবং চিকিৎসাধীন রয়েছেন, এই তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যে।

জাও মিন তুন সাও উইনের বিষয়ে দুইবার বক্তব্য দিলেও তার অনুপস্থিতিতে জল্পনা-কল্পনা থেমে নেই।

অপর একটি গুজব হল মিন অং হ্লাইং সো উইনকে বরখাস্ত করেছেন।

গত পাঁচ মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বেশ কয়েকবার পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে এবং অসম্মানের শিকার হয়েছে। সামরিক জান্তা প্রধান হ্লাইং এর জনপ্রিয়তা কমেছে এবং সামরিক বাহিনীর সমর্থকরা সো উইনকে হ্লাইং এর স্থলাভিষিক্ত করার পরিকল্পনা করছিলেন।

Comments