রাখাইনে শুক্রবারের গোলাগুলিতে অন্তত ১২ রোহিঙ্গা নিহত: জাতিসংঘ

মিয়ানমারে ইতোমধ্যে চীন ও ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কিছু সামরিক ঘাঁটি ও বাণিজ্য রুটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
রাখাইন
বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ইতোমধ্যে রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত শুক্রবার দেশটির সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলিতে অন্তত ১২ রোহিঙ্গা নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে।

এ তথ্য জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ গণহত্যা প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন অংশে বিদ্রোহীরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। 

ইতোমধ্যে চীন ও ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের সামরিক ঘাঁটি ও বাণিজ্য রুটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ইতোমধ্যে রাখাইনের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।

বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, 'সামরিক অভ্যুত্থানের তিন বছর পর মিয়ানমারের ক্রমাগত অবনতিশীল মানবাধিকার সংকট এখন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। দেশটির জনগণের দুর্দশার দিকেও বিশ্ববাসীর যথেষ্ট মনোযোগ নেই।'

রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরসহ দেশটির প্রায় ৭৪টি শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ইন্টারনেট সেবা সম্পূর্ণ বন্ধ কিংবা আংশিক সচল।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'গত বছরের নভেম্বরে দেশটিতে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাখাইন রাজ্য বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারি আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ে হপন নিয়ো লেইক গ্রামে অন্তত ১২ রোহিঙ্গা নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।'

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ওই গ্রামে আরাকান আর্মি অবস্থান নিয়েছিল এবং সেনাবাহিনী বারবার সেখানে গোলাবর্ষণ করেছে। এতে গ্রামের অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, 'মিয়ানমারের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী। সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিরোধীদের মধ্যে তুমুল যুদ্ধে ব্যাপক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে।'

সূত্রের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে জানানো হয়, গত অক্টোবর থেকে দেশটিতে ৫৫৪ জনের বেশি লোক মারা গেছে। ২০২৩ সালে সামগ্রিকভাবে সেনাবাহিনীর হামলায় ১৬০০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যা আগের বছরের থেকে প্রায় ৩০০ বেশি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত তিন বছরে সেনাবাহিনীর কাছে বন্দী থাকা অবস্থায় প্রায় ১ হাজার ২৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ভলকার তুর্ক বলেন, 'শুধু সামরিক নেতৃত্বের জবাবদিহি, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি ও বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দেওয়ার মধ্য দিয়ে এই সংকটের সমাধান হবে।'

তিনি জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রকে এ সংকট মোকাবিলার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। এর মধ্যে সেনাবাহিনীকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ঠেকাতে মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ অস্ত্র, জেটফুয়েল ও বৈদেশিক মুদ্রার প্রবেশ সীমিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Chief Adviser Muhammad Yunus

Chief Adviser Yunus's UNGA trip a critical turning point

Now is the best chance for Bangladesh to strengthen international cooperation.

12h ago